Monday 2 September 2019

গণেশ চতুর্থী

No photo description available.
আজ শুভ গণেশ চতুর্থী, সেই উপলক্ষ্য মাথায় রেখে আজ হয়ে যাক গণেশময় দিন।
ভাদ্র ও মাঘমাসের শুক্লাচতুর্থীকে গণেশ চতুর্থী বলা হয়। হিন্দু বিশ্বাসে এই দিনটি গণেশের জন্মদিন। হিন্দু চন্দ্র-সৌর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভাদ্রমাসে যা সাধারণত আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই পড়ে, গণেশ পুজোর আয়োজন করা হয়। গণপতি, বিনয়াক এবং বিঘ্নহন্তার মতো নানা নাম গণেশের। বলা হয়, গণেশ পুজো বাদ দিয়ে কোনও পুজোই সম্পূর্ণ হয় না।গণেশকে বলা হয় বিঘ্নহন্তা অর্থাৎ যিনি বাধা বিপত্তি নাশ করেন। ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে নানা বিপত্তি থেকে মুক্তি পেতেই ভক্তরা এই পুজো করেন।গণেশ যে খেতে ভালোবাসেন তা সকলেরই জানা। বিশেষ করে লাড্ডু আর মোদক তাঁর প্রিয়। মোদক হল চালের গুঁড়ো দিয়ে নারকেলের পুর দিয়ে তৈরি বিশেষ মিষ্টি।
গণেশের মাথাটি হাতির মতো কেন, তার ব্যাখ্যা একাধিক পুরাণের নানা গল্পে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত, এই ব্যাখ্যা গণেশের জন্ম-সংক্রান্ত একটি বিষয়। এই সব গল্পে গণেশ-উপাসনাকারী সম্প্রদায়ের বিপুল জনপ্রিয়তার ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়। ভক্তেরা সাধারণত তাঁর ‘গজমুণ্ড’টিকে বুদ্ধি, অতুলনীয় শক্তি, বিশ্বস্ততা এবং হাতির অন্যান্য চারিত্রিক গুণের প্রতীক হিসেবে দেখেন। তাঁর বিশাল কানদুটি জ্ঞান ও সাহায্যপ্রার্থীর প্রার্থনা শ্রবণের ক্ষমতার প্রতীক।
সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি সম্ভবত শিব পুরাণ থেকে গৃহীত হয়েছে। এক দিন দেবী পার্বতী কৈলাসে স্নান করছিলেন। স্নানাগারের বাইরে তিনি নন্দীকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, যাতে তাঁর স্নানের সময় কেউ ভিতরে ঢুকতে না পারে। এই সময় শিব এসে ভিতরে প্রবেশ করতে চান। নন্দী শিবের বাহন। তাই প্রভুকে তিনি বাধা দিতে পারলেন না। পার্বতী রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, নন্দী যেমন শিবের অনুগত, তেমনই তাঁর অনুগত কোনো গণনেই। তাই তিনি তাঁর প্রসাধনের হলুদমাখা কিছুটা নিয়ে গণেশকে সৃষ্টি করলেন এবং গণেশকে নিজের অনুগত পুত্র রূপে ঘোষণা করলেন।
এরপর থেকে পার্বতী স্নানাগারের বাইরে গণেশকে দাঁড় করাতেন। একবার শিব এলেন। তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলেন। কিন্তু গণেশ তাঁকে বাধা দিলেন। শিব রেগে গিয়ে তাঁর বাহিনীকে আদেশ দিলেন গণেশকে হত্যা করার। কিন্তু তারা গণেশের সামান্য ক্ষতি করতেও সক্ষম হল না।
এতে শিব অবাক হলেন। তিনি বুঝলেন, গণেশ সামান্য ছেলে নয়। তাই তিনি নিজে গণেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলেন। শিব গণেশের মুণ্ডটি কেটে তাকে হত্যা করলেন। একথা জানতে পেরে পার্বতীও রেগে সমগ্র সৃষ্টি ধ্বংস করে ফেলতে উদ্যোগী হলেন। তখন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তাঁর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। পার্বতী দুটি শর্ত দিলেন। প্রথমত, গণেশের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার বিধি প্রবর্তন করতে হবে।
এই সময় শিবেরও রাগ পড়ে গিয়েছিল। তিনি পার্বতীর শর্ত মেনে নিলেন। তিনি ব্রহ্মাকে উত্তর দিকে পাঠিয়ে বললেন, যে প্রাণীটিকে প্রথমে দেখতে পাওয়া যাবে, তারই মাথাটি কেটে আনবে। কিছুক্ষণ পরে ব্রহ্মা এক শক্তিশালী হাতির মাথা নিয়ে ফিরে এলেন। শিব সেই মাথাটি গণেশের দেহে স্থাপন করলেন। তারপর তাঁর মধ্যে প্রাণের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হল। শিব গণেশকে নিজ পুত্র ঘোষণা করলেন এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে সকল গণের অধিপতি নিযুক্ত করা হল।
গণেশের উৎপত্তি ও তাঁর হাতির মাথা নিয়ে আরেকটি গল্প প্রচলিত আছে: পুরাকালে হাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এক অসুরের অস্তিত্ব ছিল। তার নাম ছিল গজাসুর। সে একবার প্রচণ্ড তপস্যা করেছিল। শিব তার তপস্যার তুষ্ট হয়ে তাকে মনোমত বর দিতে ইচ্ছা করেন। অসুর চাইল, তার শরীর থেকে যেন সব সময় আগুন বেরিয়ে আসতে থাকে, যাতে কেউ তার কাছে ঘেঁষতে সাহস না পায়। শিব তাকে সেই বর দেন। কিন্তু গজাসুর তার তপস্যা চালিয়ে গেল। শিব আরেকবার তার সামনে এসে তাকে বর দিতে চাইলেন। অসুর বলল, “আমি চাই আপনি আমার পাকস্থলীতে বাস করুন।”
অল্পে তুষ্ট শিব গজাসুরকে মনোমত বর দিয়ে দেন। কিন্তু এই বর অন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। পার্বতী তাঁকে খুঁজতে বের হন। শেষে তিনি নিজের ভাই বিষ্ণুর সাহায্যে শিবকে খুঁজে পান। বিষ্ণু তখন শিবের বাহন নন্দীকে এক নৃত্যকারী ষাঁড় বানিয়ে নিজে বাঁশিওয়ালার ছদ্মবেশ নেন। এরপর উভয় আসেন গজাসুরের কাছে বাঁশি বাজাতে। বিষ্ণুর বাঁশি শুনে গজাসুর খুশি হয়ে তাঁকে কিছু দিতে চাইল। বিষ্ণু বললেন, তাঁর গজাসুরের পাকস্থলীতে বন্দী শিবের মুক্তি চাই। সে বিষ্ণুকে চিনতে পেরে তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ল শিব মুক্তি পেলেন। তখন গজাসুর শেষ বরটি চাইল। সে বলল, “আমি চাই, আমি মরে যাবার পরও যেন লোকে আমার মাথাটিকে পূজা করে।” শিব তখন নিজের পুত্রকে সেখানে এনে গজাসুরের সঙ্গে নিজ পুত্রের মুণ্ডবদল করালেন। সেই থেকে সকল দেবতার পূজার আগে গণেশের পূজা চালু হল।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ-এর কাহিনি অনুসারে, গণেশের জন্ম হয়েছিল অন্যভাবে। শিব ও পার্বতী পুত্রলাভের আশায় বর্ষব্যাপী পুণ্যক ব্রত ও বিষ্ণুপূজা করেছিলেন। এই ব্রতে তুষ্ট হয়ে বিষ্ণু বলেছিলেন, তিনি প্রতি কল্পে পার্বতীর পুত্ররূপে অবতীর্ণ হবেন। এরপর পার্বতীর গর্ভে এক পুত্রের জন্ম হয়। সকল দেবদেবী তাঁর জন্ম উপলক্ষে উৎসবে মেতে ওঠেন। যদিও সূর্যের পুত্র শনি শিশুটির দিকে তাকাতে ইতস্তত করেন। কারণ শনির দৃষ্টি অমঙ্গলজনক। কিন্তু পার্বতীর পীড়াপীড়িতে শনি শিশুটির দিকে তাকাতে বাধ্য হন। মুহুর্তের মধ্যে শিশুর মস্তক ছিন্ন হয়ে গোলোকে চলে যায়। শিব ও পার্বতী এতে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়লে বিষ্ণু গরুড়ের পিঠে চড়ে পুষ্পভদ্র নদীর তীরে এসে উপস্থিত হন। সেখান থেকে তিনি একটি হস্তিশিশুর মাথা নিয়ে ফিরে আসেন। এরপর পার্বতীর শিশুর মুণ্ডহীন দেহে সেই হাতির মাথাটি বসিয়ে তার প্রাণ ফিরিয়ে আনা হয়। এই শিশুর নাম রাখা হয় গণেশ এবং দেবতারা তাঁকে আশীর্বাদ করেন।ভাদ্র ও মাঘমাসের শুক্লাচতুর্থীকে গণেশ চতুর্থী বলা হয়। হিন্দু বিশ্বাসে এই দিনটি গণেশের জন্মদিন। হিন্দু চন্দ্র-সৌর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভাদ্রমাসে যা সাধারণত আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই পড়ে, গণেশ পুজোর আয়োজন করা হয়। গণপতি, বিনয়াক এবং বিঘ্নহন্তার মতো নানা নাম গণেশের। বলা হয়, গণেশ পুজো বাদ দিয়ে কোনও পুজোই সম্পূর্ণ হয় না।গণেশকে বলা হয় বিঘ্নহন্তা অর্থাৎ যিনি বাধা বিপত্তি নাশ করেন। ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে নানা বিপত্তি থেকে মুক্তি পেতেই ভক্তরা এই পুজো করেন।গণেশ যে খেতে ভালোবাসেন তা সকলেরই জানা। বিশেষ করে লাড্ডু আর মোদক তাঁর প্রিয়। মোদক হল চালের গুঁড়ো দিয়ে নারকেলের পুর দিয়ে তৈরি বিশেষ মিষ্টি।
গণেশের মাথাটি হাতির মতো কেন, তার ব্যাখ্যা একাধিক পুরাণের নানা গল্পে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত, এই ব্যাখ্যা গণেশের জন্ম-সংক্রান্ত একটি বিষয়। এই সব গল্পে গণেশ-উপাসনাকারী সম্প্রদায়ের বিপুল জনপ্রিয়তার ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়। ভক্তেরা সাধারণত তাঁর ‘গজমুণ্ড’টিকে বুদ্ধি, অতুলনীয় শক্তি, বিশ্বস্ততা এবং হাতির অন্যান্য চারিত্রিক গুণের প্রতীক হিসেবে দেখেন। তাঁর বিশাল কানদুটি জ্ঞান ও সাহায্যপ্রার্থীর প্রার্থনা শ্রবণের ক্ষমতার প্রতীক।
সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি সম্ভবত শিব পুরাণ থেকে গৃহীত হয়েছে। এক দিন দেবী পার্বতী কৈলাসে স্নান করছিলেন। স্নানাগারের বাইরে তিনি নন্দীকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, যাতে তাঁর স্নানের সময় কেউ ভিতরে ঢুকতে না পারে। এই সময় শিব এসে ভিতরে প্রবেশ করতে চান। নন্দী শিবের বাহন। তাই প্রভুকে তিনি বাধা দিতে পারলেন না। পার্বতী রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, নন্দী যেমন শিবের অনুগত, তেমনই তাঁর অনুগত কোনো গণনেই। তাই তিনি তাঁর প্রসাধনের হলুদমাখা কিছুটা নিয়ে গণেশকে সৃষ্টি করলেন এবং গণেশকে নিজের অনুগত পুত্র রূপে ঘোষণা করলেন।
এরপর থেকে পার্বতী স্নানাগারের বাইরে গণেশকে দাঁড় করাতেন। একবার শিব এলেন। তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলেন। কিন্তু গণেশ তাঁকে বাধা দিলেন। শিব রেগে গিয়ে তাঁর বাহিনীকে আদেশ দিলেন গণেশকে হত্যা করার। কিন্তু তারা গণেশের সামান্য ক্ষতি করতেও সক্ষম হল না।
এতে শিব অবাক হলেন। তিনি বুঝলেন, গণেশ সামান্য ছেলে নয়। তাই তিনি নিজে গণেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলেন। শিব গণেশের মুণ্ডটি কেটে তাকে হত্যা করলেন। একথা জানতে পেরে পার্বতীও রেগে সমগ্র সৃষ্টি ধ্বংস করে ফেলতে উদ্যোগী হলেন। তখন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তাঁর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। পার্বতী দুটি শর্ত দিলেন। প্রথমত, গণেশের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার বিধি প্রবর্তন করতে হবে।
এই সময় শিবেরও রাগ পড়ে গিয়েছিল। তিনি পার্বতীর শর্ত মেনে নিলেন। তিনি ব্রহ্মাকে উত্তর দিকে পাঠিয়ে বললেন, যে প্রাণীটিকে প্রথমে দেখতে পাওয়া যাবে, তারই মাথাটি কেটে আনবে। কিছুক্ষণ পরে ব্রহ্মা এক শক্তিশালী হাতির মাথা নিয়ে ফিরে এলেন। শিব সেই মাথাটি গণেশের দেহে স্থাপন করলেন। তারপর তাঁর মধ্যে প্রাণের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হল। শিব গণেশকে নিজ পুত্র ঘোষণা করলেন এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে সকল গণের অধিপতি নিযুক্ত করা হল।
গণেশের উৎপত্তি ও তাঁর হাতির মাথা নিয়ে আরেকটি গল্প প্রচলিত আছে: পুরাকালে হাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এক অসুরের অস্তিত্ব ছিল। তার নাম ছিল গজাসুর। সে একবার প্রচণ্ড তপস্যা করেছিল। শিব তার তপস্যার তুষ্ট হয়ে তাকে মনোমত বর দিতে ইচ্ছা করেন। অসুর চাইল, তার শরীর থেকে যেন সব সময় আগুন বেরিয়ে আসতে থাকে, যাতে কেউ তার কাছে ঘেঁষতে সাহস না পায়। শিব তাকে সেই বর দেন। কিন্তু গজাসুর তার তপস্যা চালিয়ে গেল। শিব আরেকবার তার সামনে এসে তাকে বর দিতে চাইলেন। অসুর বলল, “আমি চাই আপনি আমার পাকস্থলীতে বাস করুন।”
অল্পে তুষ্ট শিব গজাসুরকে মনোমত বর দিয়ে দেন। কিন্তু এই বর অন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। পার্বতী তাঁকে খুঁজতে বের হন। শেষে তিনি নিজের ভাই বিষ্ণুর সাহায্যে শিবকে খুঁজে পান। বিষ্ণু তখন শিবের বাহন নন্দীকে এক নৃত্যকারী ষাঁড় বানিয়ে নিজে বাঁশিওয়ালার ছদ্মবেশ নেন। এরপর উভয় আসেন গজাসুরের কাছে বাঁশি বাজাতে। বিষ্ণুর বাঁশি শুনে গজাসুর খুশি হয়ে তাঁকে কিছু দিতে চাইল। বিষ্ণু বললেন, তাঁর গজাসুরের পাকস্থলীতে বন্দী শিবের মুক্তি চাই। সে বিষ্ণুকে চিনতে পেরে তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ল শিব মুক্তি পেলেন। তখন গজাসুর শেষ বরটি চাইল। সে বলল, “আমি চাই, আমি মরে যাবার পরও যেন লোকে আমার মাথাটিকে পূজা করে।” শিব তখন নিজের পুত্রকে সেখানে এনে গজাসুরের সঙ্গে নিজ পুত্রের মুণ্ডবদল করালেন। সেই থেকে সকল দেবতার পূজার আগে গণেশের পূজা চালু হল।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ-এর কাহিনি অনুসারে, গণেশের জন্ম হয়েছিল অন্যভাবে। শিব ও পার্বতী পুত্রলাভের আশায় বর্ষব্যাপী পুণ্যক ব্রত ও বিষ্ণুপূজা করেছিলেন। এই ব্রতে তুষ্ট হয়ে বিষ্ণু বলেছিলেন, তিনি প্রতি কল্পে পার্বতীর পুত্ররূপে অবতীর্ণ হবেন। এরপর পার্বতীর গর্ভে এক পুত্রের জন্ম হয়। সকল দেবদেবী তাঁর জন্ম উপলক্ষে উৎসবে মেতে ওঠেন। যদিও সূর্যের পুত্র শনি শিশুটির দিকে তাকাতে ইতস্তত করেন। কারণ শনির দৃষ্টি অমঙ্গলজনক। কিন্তু পার্বতীর পীড়াপীড়িতে শনি শিশুটির দিকে তাকাতে বাধ্য হন। মুহুর্তের মধ্যে শিশুর মস্তক ছিন্ন হয়ে গোলোকে চলে যায়। শিব ও পার্বতী এতে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়লে বিষ্ণু গরুড়ের পিঠে চড়ে পুষ্পভদ্র নদীর তীরে এসে উপস্থিত হন। সেখান থেকে তিনি একটি হস্তিশিশুর মাথা নিয়ে ফিরে আসেন। এরপর পার্বতীর শিশুর মুণ্ডহীন দেহে সেই হাতির মাথাটি বসিয়ে তার প্রাণ ফিরিয়ে আনা হয়। এই শিশুর নাম রাখা হয় গণেশ এবং দেবতারা তাঁকে আশীর্বাদ করেন।

গণেশের বাহন ইদুর
পুরাকালে মুষিকাসুর নামে এক প্রচন্ড অত্যাচারী অসুর ছিল, তাঁর দুর্বিসহ অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দেবতারা দেবাদিদেব মহাদেবের শরণাপন্ন হলে মাহাদেব দেবতাদের আস্বস্থ করে শিব গনেশকে মুষিকাসুর নিধন করতে অসুরপুরী আক্রমণ করতে বলেন, পিতার নির্দেশে অসুরপুরী আক্রমণ করে অসুর নিধন করতে লাগলেন,সবশেষে মুষিকাসুর যুদ্ধে এলে গণেশ তাকে মুষিকে পরিনত তাঁর পিঠে চরে বসেন। গণপতি গণেশের বিশাল দেহের চাপে যখন মুষিকাসুরের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠলো।মুষিকাসুর তখন গণেশের কাছে নিজের প্রাণভিক্ষা চাইলে গণেশ তাকে ক্ষমা করেন এবং মুষিকাসুরকে চিরকাল তাঁর বাহন হিসেবে রাখার প্রতিশ্রুতি দেন এবং এও বলেন যে তাঁর বাহন ক্ষুদ্র মুষিক হলেও তিনি সবসময় সামান্য ফুলের সমান উজন নিয়েই মুষিকের পিঠে উঠবেন।
আবার আরেকমতে কোন একসময় ইন্দ্রের সভায় যখন গন্ধর্বরা ইন্দ্রের সাথে গভীর আলোচনায় ব্যাস্ত তখন এক গন্ধর্ব সেই আলোচনায় অন্যমনস্ক হয়ে অপ্সরাদের সাথে আমোদ প্রমোদের মেতে উঠলে ক্রোধিত ইন্দ্র তাকে ইদুরে পরিনত করে মর্ত্যে নিক্ষেপ করতে প্রহরীদের আদেশ করেন, তাকে মর্ত্যে নিক্ষেপ করলে সেই মুষিক্রূপী গন্ধর্ব গিয়ে পড়েন পরাশর মুনির আশ্রমে এবং সেই মুনির আশ্রমে প্রচণ্ড তাণ্ডব শুরু করে, সেই অবস্থায় সেই আশ্রমের মুনিরা বিঘ্নহর্তা গনেশের শরণাপন্ন হন। গণেশ তখন সেই মুষিকরূপী গন্ধর্ব কে শান্ত করে নিজের বাহন করে নেন।
নষ্ট চন্দ্র
একবার গণেশ চতুর্থীতে প্রতি ভক্তের বাড়িতে মোদক ভক্ষণ করে ভরা পেটে ইঁদুরে চেপে ফিরছিলেন গণেশ এখানে উল্লেখ্য গণেশ অত্যন্ত মোদকপ্রিয় দেবতা।পথে ইঁদুরের সামনে একটি সাপ এসে পড়লে সে ভয়ে কাঁপতে শুরু করে। এতে গণেশ পড়ে যান ও তাঁর পেট ফেটে সব মোদক রাস্তায় গড়িয়ে পরে যায়। গণেশ উঠে সেগুলি কুড়িয়ে পেটের মধ্যে পুরে পেটের ফাটা জায়গাটি ওই সাপ দিয়ে বেঁধে ফেলেন। আকাশ থেকে চন্দ্র ঙ্গণেশের এই কান্ড কারখানা দেখে হেসে ফেলেন, এবং গনেশের বিশাল দেহ ও গজমুখ নিয়ে অপমান করতে শুরু করেন।চন্দ্রের এমন আচরণে ক্রুদ্ধ হয়ে গণেশ শাপ দেন যে ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থীর দিন যে চাঁদ দেখবে তাঁর জীবনে নেমে আসবে দুর্ভোগ হতে হবে অপমানিত। কথিত আছে এ থেকে স্বয়ং কৃষ্ণও নিস্তার পান নি, সেই দিনে চাঁদকে দেখে কৃষ্ণ মণি অপহরণের মিথ্যা অভিযোগে অপমানিত হয়ে ছিলেন।
অপর এক কাহিনী অনুসারে ভাদ্রমাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে গণেশ কৈলাশ থেকে জন্মদিনের ভোজ সেরে যখ স্ত্রী রিদ্ধি ও সিদ্ধি কে নিয়ে গণলোকে ফিরে যাচ্ছিলেন তখন পথে চন্দ্রের সাথে দেখা হয়, আপন সৌন্দর্যে গর্বিত চন্দ্র গণেশের হাথির মাথা ও বিশাল ভুঁড়ি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক আচরণ করেন এবং রিদ্ধি ও সিদ্ধির মট অপ্রুপ সুন্দরী স্ত্রী গণেশের ভাগ্যে কি করে জুটলো এ নিয়ে অপমান করতে থাকেন এতে গণেশ ক্রুদ্ধ হয়ে চন্দ্রকে অভিসপমাত করেন ফলে চন্দ্র নিশপ্রভ হয়ে পড়েন, গণেশ এও অভিশাপ দেন যে ের পর থেকে আর কেউ চন্দ্রকে দেখবে না আর যদি দেখে তবে তাঁর জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসবে। চন্দ্র তখন গনেশের কাছে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতাপ করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন এতে গণেশ শান্ত হয়ে তাঁর অভিশাপ কে কিছুটা লাঘব করেন,চন্দ্রে জ্যোতি ফিরে আসলেও মুখে কালো ছাপের কিছু কলঙ্ক থেকে যায় ও ভাদ্রমাসের শুক্লা চতুর্থীতে চন্দ্র শাপগ্রস্থই থাকেন যার ফলে ঐদিন চন্দ্রদেব নষ্ট চন্দ্র হিসেবে থেকে যান,তার দর্শনের ফলে মানব জীবনে দুঃখ নেমে আসে।
(সংগৃহীত)

কৌশিকী অমাবস্যা

  ছবি  কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...