Wednesday 21 September 2016

পিতৃতর্পণ ... কিছু কথা... কিছু জানবার বিষয়।


ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার পরের তিথি অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে পরের অমাবস্যা বা মহালয়ার দিন পর্যন্ত দিনগুলিকে পিতৃপক্ষ বলে জানা যায়।এই পিতৃপক্ষে স্বর্গত পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে পার্বন শ্রাদ্ধ ও তর্পন করা হয়। বিস্বাস যমালয় থেকে মর্ত্যলোকে এ সময় পিতৃ পুরুষেরা আসেন তাঁদের বংশধরের কাছে এবং তাদেরকে তৃপ্ত করার জন্য তিল ও জল দান করা হয়। তাহাদের যাত্রাপথকে আলোকিত করার জন্য উল্কাদান করা হয়। মহাভারতে বর্ণিত আছে যে, মহাবীর কর্ণের আত্মা স্বর্গে গেলে সেখানে তাঁকে খেতে দেওয়া হল শুধুই সোনা আর ধনরত্ন। তার কারণ কর্ণ ইন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করলে ইন্দ্র বললেন যে যেহেতু তিনি সারাজীবন সোনাদানাই দান করেছেন এবং পিতৃপুরুষকে জল দান করেননি। তাই তার এই অবস্থা। তাতে কর্ণ বলেন, যে এতে তাঁর কী দোষ?তাঁর  পিতৃপুরুষের কথা তো তিনি জানতে পারলেন যুদ্ধ শুরুর আগের রাতে, যখন মা কুন্তী  এসে তাঁর জন্ম কাহিনিও পরিচয়।তারপর যুদ্ধে ভাইয়ের হাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। সেই কারনে পিতৃতর্পণ তিনি করতে পারেন নাই  যখন ইন্দ্র বুঝলেন যে এতে কর্ণের কোন দোষ নেই। তাই তিনি কর্ণকে পনেরো দিনের জন্য মর্ত্যে ফিরে গিয়ে পিতৃপুরুষকে জল ও অন্ন দিতে অনুমতি দেন  ইন্দ্রের কথা মতো এক পক্ষকাল ধরে কর্ণ মর্ত্যে অবস্থান করে পিতৃপুরুষকে অন্নজল প্রদান করে নিজের নিজের পাপ দূর করেনএবং সেই পক্ষটি পরিচিত হল পিতৃপক্ষ নামে। 
মার্কণ্ডেয় পুরাণ গ্রন্থে বলা হয়েছে, পিতৃগণ শ্রাদ্ধে তুষ্ট হলে স্বাস্থ্য, ধন, জ্ঞান ও দীর্ঘায়ু এবং পরিশেষে উত্তরপুরুষকে স্বর্গ ও মোক্ষ প্রদান করেন। পিতৃতর্পণে আমরা যাদের উদ্দেশ্যে  জল দান করে থাকি তা কিছুটা এই রকম...

প্রথমে আমরা করি দেব তর্পণ  এই মন্ত্রে 

ওঁ ব্রহ্মা তৃপ্যতাম। ওঁ বিষ্ণুস্তৃপ্যতাম্।ওঁ রুদ্রস্তৃপ্যতাম্। ওঁ প্রজাপতিস্তৃপ্যতাম্। 

এই চার জন ছাড়া ও অন্যান্য দেবতাদের উদ্দ্যশ্যে ও তর্পণ করা হয় এই মন্ত্রে...

ওঁ নমঃ দেবা যক্ষাস্তথা নাগা, গন্ধবর্বাপ্সরসোহসুরাঃ।
ক্রুরাঃ সর্পাঃ সূপর্ণাশ্ঢ, তরবো জিহ্মগাঃ খগাঃ ।।
বিদ্যাধরা জলাধারা-স্তথৈবাকাশগামিনঃ ।
নিরাহারাশ্চ যে জীবাঃ পাপে-ধমের্ম রতাশ্চ যে ।
তেষাং আপ্যায়নায়ৈতৎ, দীয়তে সলিলং ময়া ।।
যারঅর্থ হল দেব, যক্ষ, নাগ, গন্ধবর্ব, অপ্সরা, অসুর, ক্রুরস্বভাব জন্তু, সর্প, সুপর্ণ যা হল গরুড়জাতীয় পক্ষী  বৃক্ষ, সরীসৃপ, সাধারন পক্ষী, বিদ্যাধর কিন্নর, জলচর, খেচর, ভূত  এবং পাপে ও ধর্মকার্য্যেরত যত জীব আছে, তাহাদের তৃপ্তির জন্য আমি এই জল দিতেছি ।

তারপরে মনুষ্য তর্পণ করা হয় এই মন্ত্রেঃ-

ওঁ নমঃ সনকশ্চ সনন্দশ্চ, তৃতীয়শ্চ সনাতনঃ .
কপিলশ্চাসুরিশ্চৈব, বোঢ়ুঃ পঞ্চশিখস্তথা ।
সর্বেব তে তৃপ্তিমায়ান্তু, মদ্দত্তে-নাম্বুদা সদা ।।
অর্থাৎ সনক, সনন্দ, সনাতন, কপিল,আসুরি, বোঢ়ু ও পঞ্চশিখ আপনারা সকলে আমার প্রদত্ত জলে সর্বদা তৃপ্তিলাভ করুন।
আমরা মরীচি, অত্রি,অঙ্গিরা,পুলস্ত,পুলহ, ক্রতু,প্রচেতা, বশিষ্ঠ, ভৃগু ও নারদ প্রভৃতি ঋষি গনের তর্পণ করি এই মন্ত্রে
ওঁ মরীচিস্তৃপ্যতাং, ওঁ অত্রিস্তৃপ্যতাং,ওঁ অঙ্গিরাস্তৃপ্যতাং,ওঁপুলস্তস্তৃপ্যতাংওঁ পুলহস্তৃপ্যতাংওঁ ক্রুতুস্তৃপ্যতাং,  ওঁ প্রচেতাস্তৃপ্যতাং,ওঁ বশিষ্ঠস্তৃপ্যতাংওঁ ভৃগুস্তৃপ্যতাং, ওঁ নারদস্তৃপ্যতাং।

দিব্য-পিতৃ-তর্পণে আমরা এই সাতটি মন্ত্র দ্বারা প্রত্যেককে এক অঞ্জলি সতিল জল দান করে থাকি  
ওঁ অগ্নিষ্বত্তাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।
ওঁ সৌম্যাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।
ওঁ হবিষ্মন্তঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।
ওঁ উষ্মপাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।
ওঁ সুকালিনঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।
ওঁ বর্হিষদঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।
ওঁ আজ্যপাঃ পিতরস্তৃপ্যন্তা- মেতৎ সতিল-গঙ্গোদকং তেভ্যঃ স্বধাঃ ।

তার পর যমের উদ্দেশ্যে  জল দান করা হয় এই মন্ত্র উচ্চারণ করে
ওঁ নমঃ যমায় ধর্মরাজায়, মৃত্যবে   চান্তকায় চ, বৈবস্বতায় কালায়, সর্ব্বভূতক্ষয়ায় চ ।
 ঔডুম্বরায় দধ্নায়, নীলায় পরমেষ্ঠিনে, বৃকোদরায় চিত্রায়, চিত্রগুপ্তায় বৈ নমঃ 

তারপর পিতৃ- আবাহন করা হয় এই মন্ত্রে
ওঁ আগচ্ছন্তু মে পিতরঃ ইমং গৃহ্ণন্ত্বপোহঞ্জলিং । 

অর্থাৎ  হে আমার পূর্ব্বপুরুযগণ  আসুন, এই অঞ্জলি পরিমিত জল গ্রহণ করুন।
                                      তারপর  ভক্তিসহকারে স্বর্গত পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ, মাতামহ, প্রমাতামহ, বৃদ্ধপ্রমাতামহ, মাতা, পিতামহী, প্রপিতামহী, মাতামহী, প্রমাতামহী, বৃদ্ধপ্রমাতামহী, গুরু, জ্যেঠা, খুড়া, বিমাতা, ভ্রাতা, ভগ্নী, জ্যেঠী, খুড়ী, পিসি,মাসী, মাতুল, মাতুলানী, শ্বশুর, শাশুড়ী, ভগ্নিপতি, জ্ঞাতি, আদি সকলের নামে তর্পণ করা হয়।
তর্পণের সবচাইতে সুন্দর যে অংশটি যা আমাকে অতিশয় অভিভূত করে সেটা হল আমার বংশে যে সকল জীব অগ্নিদ্বারা দগ্ধ হইয়াছেন, অর্থাৎ যাঁহাদের দাহাদি সংস্কার হইয়াছে  বা  যাঁহারা দগ্ধ হন নাই  অর্থাৎ কেহই তাঁহাদের দাহাদি-সংস্কার কার্য্য করেন নাই  তাঁদের তৃপ্তি ও স্বর্গ লাভের জন্যে এই মন্ত্রে জল দান করা হয়  যেমন- 
ওঁ নমঃ অগ্নদগ্ধাশ্চ যে জীবা, যেহপ্যদগ্ধাঃ কুলে মম ।
 ভূমৌ দত্তেন তৃপ্যন্তু, তৃপ্তা যান্ত পরাং গতিং ।। 

এবং যে সকল আমাদের বন্ধু ছিলেন, এবং যে সকল আমার বন্ধু নন, যে সকল জন্ম-জন্মান্তরে আমাদিগের বন্ধু ছিলেন, এবং যারা আমাদের নিকট হইতে জলের প্রতাশা করেন, তাঁদের সম্পূর্ণরূপে তৃপ্তি লাভের জন্যে এই মন্ত্রে তর্পণ...
ওঁ নমঃ যে বান্ধবা অবান্ধবা বা, যে অন্য জন্মনি বান্ধবাঃ ।
 তে তৃপ্তিং অখিলাং যান্ত, যে চ অস্মৎ তোয়-কাঙ্খিণঃ ।। 

তারপর করা হয় ভীষ্ম-তর্পণ এই মন্ত্রে...

ওঁ নমঃ বৈয়াঘ্রপদ্য গোত্রায় ,সাঙ্কৃতিপ্রবরায় চ ।
 অপুত্রায় দদাম্যেতৎ সলিলং ভীষ্মবর্ম্মণে ।।
ওঁ নমঃ ভিষ্মঃ শান্তনবো  বীরঃ , সত্যবাদী জিতেন্দ্রিয়ঃ ।
 আভিরদ্ভি- রবাপ্নোতু, পুত্র-পৌত্রৌচিতাং ক্রিয়াং ।।


অর্থাৎ  বৈয়াঘ্রপদ্য যাঁহার গোত্র,সাঙ্কৃতি যাঁহার প্রবর, সেই অপুত্রক ভীষ্মবর্ম্মাকে এই জল দিতেছি।শান্তনু-তনয় বীর, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয় ভীষ্মবর্ম্মা এই জল দ্বারা পুত্র-পৌত্রচিত তর্পণাদি-ক্রিয়া-জনিত তৃপ্তি লাভ করুন ।
ভীষ্ম-তর্পণের পর করা হয় রাম-তর্পণ, সম্পূর্ণ তর্পণ করা সম্ভব না হলে  শুধু এই তর্পণ  করলেই হয়।শ্রীরামচন্দ্র বনবাস কালে এই মন্ত্রেই তর্পণ করেছিলেন বলে কথিত।
মন্ত্রটি হল,
ওঁ নমঃ আ ব্রহ্মভুবনাল্লোকা, দেবর্ষি-পিতৃ-মানবাঃ ,
তৃপ্যন্তু পিতরঃ সর্ব্বে , মাতৃ-মাতামহাদয়ঃ ।
অতীত-কুলকোটীনাং, সপ্তদ্বীপ-নিবাসিনাং ।
ময়া দত্তেন তোয়েন, তৃপ্যন্তু ভুবনত্রয়ং ।।


যার অর্থ হল- ব্রহ্মলোক অবধি যাবতীয় লোক সমীপে অবস্থিত জীবগণ,যথা যক্ষ, নাগাদি, দেবগণ, যথা ব্রহ্মা , বিষ্ণু, শিব প্রভৃতি, ঋষিগণ যথা মরীঢি, অত্রি, অঙ্গিরাদি, পিতৃগণ,মনুষ্যগণ সনক, সনন্দ প্রভৃতি, পিতৃ-পিতামহাদি এবং মাতামহাদি সকলে তৃপ্ত হউন ।আমার কেবল এই জন্মের নয়, আমার বহুকোটিকুল, বহু জন্মান্তরে গত হইয়াছেন, সেই সকল কুলের পিতৃ-পিতামহাদি, সপ্তদ্বীপবাসী যথা জম্বু, প্লক্ষ, শাল্মলি, কুশ, ক্রৌঞ্চ, শাক, পুষ্কর, সমুদয় মানবগণের পিতৃ-পিতামহাদি এবং ত্রিভুবনের যাবতীয় পদার্থ আমার প্রদত্ত জলে তৃপ্ত হউন।
তারপরে করা হয় লক্ষণ-তর্পণ, রাম-তর্পণেও অশক্ত হইলে সকলে এই তর্পণ করা হয়, কারণ বনবাসকালে রাম ও সীতার সেবায় ব্যাস্ত থাকার সময় সময়াভাবে, লক্ষণ এই মন্ত্রে তর্পণ করতেন ।
ওঁ নমঃ আব্রহ্মস্তস্বপর্য্যন্তং জগৎ তৃপ্যতু ।
বাংলায় যার অর্থ হলব্রহ্মা হইতে তৃণ পর্ষ্যন্ত জগৎ , জগতের লোকে, স্থাবর জঙ্গমাদি, সকলে তৃপ্ত হউন।

তারপর বস্ত্র নিংড়ানো জলে যাঁহাদের কেহ কোথাও নাই তাঁহাদের তর্পণ করা হয় এই মন্ত্রে 
ওঁ নমঃ যে চাস্মাকং কুলে জাতা, অপুত্রা-গোত্রিণো মৃতাঃ ।
তে তৃপ্যন্তু ময়া দত্তং, বস্ত্র-নিষ্পীড়নোদকং ।।

বাংলায় যার অর্থ এই দাঁড়ায় যাঁহারা আমাদের বংশে জন্মিয়া পুত্রহীন ও বংশহীন হইয়া গত হইয়াছেন, তাঁহারা আমার এই  বস্ত্র-নিংড়ানো জলে তৃপ্ত হউন ।
তারপর  পিতৃস্তুতি করা হয়  যার মন্ত্র হল
ওঁ নমঃ পিতা-স্বর্গঃ পিতা-ধর্ম্মঃ, পিতাহি পরমং তপঃ ।
পিতরি প্রীতি-মাপন্নে, প্রীয়ন্তে সর্ব্ব-দেবতা ।।

যার অর্থ, পিতাই স্বর্গ, পিতাই ধর্ম্ম, পিতাই পরম তপস্যা অর্থাৎ পিতা সেবাই তপস্যা, পিতা প্রসন্ন হইলে সকল দেবতাই প্রীত হন ।
এবং পিতৃপ্রণাম করা হয় এই মন্ত্রে
ওঁ নমঃ পিতৃন্নমস্যে দিবি যে চ মূর্ত্তাঃ,
 স্বধাভুজঃ কাম্যফলাভিসন্ধৌ প্রদানশক্তাঃ সকলেপ্সিতানাং,
বিমুক্তিদা যেহনভিসংহাতেষু 
ওঁ নমঃ পিতৃন্নমস্যে দিবি যে চ মূর্ত্তাঃ

অর্থাৎ  যাঁহারা স্বর্গে মূর্ত্তি ধারণ করিয়া বিরাজ করিতেছেন, যাঁহারা শ্রাদ্ধান্ন ভোজন করেন, অভীষ্ট-ফলের কামনা করিলে যাঁহারা সকল বাঞ্ছিত-ফল দান করিতে সমর্থ এবং কোন ফলের কামনা না করিলে যাঁহারা মুক্তি প্রদান করেন , সেই পিতৃগণকে প্রণাম করি ।
এরপর সূর্য্যদেবের উদ্দেশে পূর্ব্বদিকে মুখ করে জল দেয়া হয় এই মন্ত্রে
 ওঁ নমো বিবস্বতে ব্রহ্মণ, ভাস্বতে বিষ্ণু তেজসে ।
জগৎসবিত্রে শুচয়ে, সবিত্রে কর্ম্মদায়িণে,
 ইদমর্ঘ্যং ওঁ শ্রীসূর্য্যায় নমঃ ।।

অর্থাৎ  হে পরম ব্রহ্মস্বরূপ সবিত্রিদেব ! আপনি তেজস্বী, দীপ্তিমান ; বিশ্বব্যাপী তেজের আধার, জগতের কর্ত্তা, পবিত্র, কর্ম্মপ্রবর্ত্তক; আপনাকে প্রণাম করি ।।
সূর্য্য-প্রণাম করা হয় এই মন্ত্রে

ওঁ নমঃ জবাকুসুম-সংঙ্কাশং, কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিং ।
ধ্বান্তারিং সর্ব্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরং ।।

বাংলায় যার অর্থ হল জবাফুলের ন্যায় রক্তবর্ণ,কশ্যপের পুত্র, অতিশয় দীপ্তশালী, তমোনাশী, সর্ব্বপাপ নাশকারী দিবাকরকে প্রণাম করি ।।
সর্বশেষে অচ্ছিদ্রাবধারণ,বৈগুণ্য-সমাধান ও জপের দ্বারা তর্পণের সমাপ্তি করা হয়।
পরিশেষে এতটুকুই বলা যায় যে তর্পণ, পূর্বপুরুষ দের সাথে পরবর্তী প্রজম্মের এক পরিচয় পর্ব অনুষ্ঠান। যার মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ দের স্মরণ করতে পারি, যাদের সাহায্যে আমাদের এই মানবদেহ অর্জন তাঁদের প্রতি আমরা এই সামান্য জল ও তিলের দ্বারা কৃতজ্ঞতা প্রদান। এই তিল-জল দানে তাঁদের কতটুকু তৃপ্তি লাভ হয় সেটা হয়তো অনেকের কাছে তর্কের বিষয়, কিন্তু আমাদের মনের কোনে হয়তো বা এই আচার কিছুটা তৃপ্তি বোধ আনে। তবে আজকাল অনেক আচার-অনুষ্ঠানই লুপ্ত প্রায় তার মধ্যে  এই পক্ষে কিছু সংখ্যক মানুষের তর্পণের আগ্রহ দেখে মনে হয় এখনও আমাদের কাছে আমদেরই পূর্বজের কিছু আচার অনুষ্ঠান সমাদৃত আছে। তবে তা কতদিন থাকবে সেটাই বিচার্য। তর্ক- যুক্তির প্রভাবে কোনদিন এই তর্পণ অনুষ্ঠান ও হারিয়ে যাবে আমাদের সমাজ থেকে।

       ভগবান সবার মঙ্গল করুন।

কৌশিকী অমাবস্যা

  ছবি  কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...