Thursday 29 March 2018

প্রসঙ্গঃ- বশিষ্ঠ মুনি ও বিশ্বামিত্র




ব্রহ্মার মানসপুত্র বশিষ্ঠ, অরুন্ধুতীর পতি এবং ইক্ষাকুকুলের পুরোহিত। অন্যদিকে কান্যকুব্জ দেশে কুশিকের পুত্র হলেন গাধি, তার পুত্র বিশ্বামিত্র ছিলেন সর্ব গুণ সম্পন্ন। বেদ, বিদ্যা, বুদ্ধিতে ভুবন বিখ্যাত।
একদিন তিনি সসৈন্য মৃগয়া করতে মহাবনে প্রবেশ করলেন। মৃগয়ায় শ্রান্ত রাজা ক্ষুধা-পিপাসায় পরিশ্রান্ত হয়ে ঘুরতে ঘুরতে বশিষ্ঠের আশ্রমে উপস্থিত হলেন। মনোহর স্থান দেখে রাজা খুশি হলেন। রাজাকে দেখে মুনি অতিথি সৎকারে মন দিলেন। রাজার সৈনিকদের পরিশ্রান্ত দেখে তিনি তার কামধেনু নন্দিনীকে ডেকে বললেন– দেখ রাজার সৈন্যরা আমার অতিথি। যে যা চাই তাই দিয়ে তাকে তুষ্ট করো।বশিষ্ঠ মুনির আজ্ঞা পেয়ে সুরভী সংসারে যা অদ্ভূত, তেমন কর্ম করল। হুঙ্কার দিয়ে নানা দ্রব্য আনলেন চর্ব্য-চষ্য-লেহ্য-পেয় নানা রত্ন ধন। বস্ত্র, অলঙ্কার, মালা, কুসুম, চন্দন, বিচিত্র পালঙ্ক আর বসার আসন। যে যা চাইতে লাগলো, তাই পেলো। সকল সৈন্য আনন্দিত হল। দরিদ্র মুনির এমন বিস্ময় কর্ম দেখে গাধির পুত্র বিশ্বামিত্র অবাক হলেন। বশিষ্ঠের কাছে গিয়ে বলেন– আমি আপনাকে এক কোটি গরু দান করবো, তাদের খুর সোনায় মন্ডিত করে দেব। তার পরিবর্তে এই ধেনু আমায় দিন। অথবা আপনি যদি চান আমি রাজ্যও দিতে রাজি আছি। হস্তী, অশ্ব, পদাতিক যত সৈন্য সব আপনাকে দেব এই ধেনুর পরিবর্তে।
বশিষ্ঠ বলেন– আমি কামধেনু দান করব না। এটি দেবতা ও অতিথিদের জন্য আমার কাছে আছে।
রাজা বললেন– মুনি, তুমি জাতে ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণদের এমন জিনিষের প্রয়োজন হয় না। এ কেবল রাজার ঘরেই সাজে। একে বনে নিয়ে তুমি কি করবে। নিজের ইচ্ছেতে ধেনু দান না করলে, আমি বল প্রয়োগ করে ছলে-বলে-কৌশলে একে অধিকার করবো।
বশিষ্ঠ বললেন- তুমি তোমার দেশে শ্রেষ্ঠ, তাও সৈন্য সামন্ত নিয়ে। যা ইচ্ছে তুমি করে দেখ। আমি তপস্বী- আমার আর কি শক্তি! শুনে বিশ্বামিত্র সৈন্যদের নির্দেশ দিলেন – কামধেনু সঙ্গে বেঁধে নিয়ে চল। শুনে সৈন্যরা কামধেনুর গলায় দড়ি বেঁধে পিছনে বাড়ী মেরে মেরে নিয়ে চললো। প্রচন্ড মার খেয়েও কামধেনু নড়ল না। সজলাক্ষে ব্যাকুল ভাবে মুনির মুখের পানে চেয়ে রইলো।
মুনি বললেন – নন্দিনী, আমার কাছে তুমি কি চাও। আমার সামনে তোমার এত কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। আমি সামান্য তপস্বী ব্রাহ্মণ, আমি আর কিবা করতে পারি তোমার জন্য। রাজা বল প্রয়োগ করে তোমায় নিয়ে যেতে চায়। 
সে সময় রাজার সৈন্যরা কামধেনুর সন্তান ছোট্ট বাছুরটিকে ধরে গলায় দড়ি বেঁধে আগে আগে টেনে নিয়ে চললো। সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছে দেখে কামধেনু নন্দিনী ডাক ছেড়ে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে মুনিকে বলল – ভগবান, বিশ্বামিত্রের সৈন্যদের কশাঘাতে অনাথা আমি ও আমার সন্তান বিলাপ করছি। আপনি তা উপেক্ষা করছেন কেন! আমি কি করবো আজ্ঞা করুন।
মুনি দুঃখিত হয়ে বলেন – ক্ষত্রিয়ের বল তেজ, ব্রাহ্মণের বল ক্ষমা। কল্যাণী, আমি তোমায় ত্যাগ করিনি। নিজের শক্তিবলে যদি থাকতে পার, তবে আমার কাছেই থাক, এর বেশি আর কি বলবো।
মুনির মুখে একথা শোনা মাত্র পয়স্বিনী(দুগ্ধবতী গাভী) কামধেনু ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করল। ঊর্দ্ধমুখে গাভী হাম্বা রবে ডাক ছেরে শরীর বাড়াতে লাগল এবং বিশ্বামিত্রের সৈন্যদের তাড়াতে লাগলো। তার বিভিন্ন অঙ্গ থেকে নানাজাতির সৈন্য লাখে লাখে বের হল। পুচ্ছ থেকে পহ্লব নামে জাতি নানা অস্ত্র হাতে তেড়ে এল। মূত্রে জন্ম হল বহু ব্যাধের। দুই পাশ থেকে জন্ম নিল কিরাত ও যবন। মুখের ফেণা থেকেও অনেক সৈন্যের জন্ম হল। চারি পা হতে নানাজাতির ম্লেচ্ছরা জন্ম নিল। সকলে নানা ধরনের অস্ত্র নিয়ে বিশ্বামিত্রের সৈন্যদের তাড়া করল। দুই দলের সৈন্যদের প্রচন্ড যুদ্ধ হল। বিশ্বামিত্রের একজন সৈন্যের বিরুদ্ধে মুনির পাঁচজন সৈন্য হল। সহ্য করতে না পেরে বিশ্বামিত্রের সৈন্যরা রণে ভঙ্গ দিল। রাজার সামনেই তারা পালাতে লাগল। অনেক সৈন্য রক্তের নদীতে আহত হয়ে পড়ে রইল। এভাবে মুনির সৈন্য রাজার সৈন্যদের পিছনে পিছনে দৌড়ে তাদের বিতাড়িত করল। মুনির সৈন্য বিশ্বামিত্রকেও বনের বাইরে পাঠিয়ে মুনিকে এসে প্রণাম করল।এরপর বিধ্বস্ত বিশ্বামিত্র সৈন্যবিহীন অবস্থায় ও শতপুত্র হারানোর শোকে কাতর হয়ে রাজধানীতে ফিরে এসে তাঁর শেষ একমাত্র পুত্রের কাঁধে রাজ্যের শাসনভার দিয়ে বনে গমন করেন ও মহাদেবের কঠোর তপস্যা শুরু করেন। মহাদেব বিশ্বামিত্রের তপস্যায় অতি সন্তুষ্ট হয়ে বর প্রদানে উপস্থিত হলে বিশ্বামিত্র তার নিকট থেকে মন্ত্রসহ সাঙ্গোপাঙ্গ ধনুর্বেদ সম্পূর্ণ আয়ত্ত করে নেন। পরে তিনি মহর্ষি বশিষ্ঠের আশ্রমে পুণরায় গমন করে তপোবন নষ্ট করে ফেলেন এবং পরে ঋষিবরের উপর পুণরায় অস্ত্রবর্ষণ করতে শুরু করেন। বশিষ্ঠদেব তখন ব্রহ্মদণ্ড হাতে নিয়ে বিশ্বামিত্রের সমস্ত অস্ত্রের মোকাবেলা করেন ও বিশ্বামিত্রকে নিরস্ত্র করেন।এতে বিশ্বামিত্রের মনে ভীষণ অভিমানের সৃষ্টি হয়। হতমান ও হতদর্প বিশ্বামিত্র উপলদ্ধি করেন যে অস্ত্রবলের চেয়ে ব্রহ্মবলের শ্রেষ্ঠত্ব অনেক বেশী এবং তাই নিজে ব্রাহ্মণত্ব লাভ করার জন্য তিনি দক্ষিণে গমন করেন ও কঠোর তপস্যা করতে লাগলেন।
বিশ্বামিত্রের দীর্ঘকালের কঠোর তপস্যায় পরিতুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা তার কাছে আসেন ও ঋষিত্ব প্রদান করেন। কিন্তু তাতেও বিশ্বামিত্র পরিতুষ্ট না হয়ে পুণরায় উগ্র তপশ্চরণে প্রবৃত্ত হন। এ সময়ে ইন্দ্রের নির্দেশে অপ্সরারূপী মেনকা ঋষিবরকে তার রূপে বিমোহিত করতে সক্ষম হন এবং তার সাথে দশ বৎসর যাপন করেন। এই দশ বৎসর স্বামীর সহিত মেনকার সংসার কালে বিশ্বামিত্র’র ঔরসে মেনকার গর্ভে শকুন্তলা নামে এক কন্যার জন্ম হয়। দশ বৎসর পরে চৈতন্য ফিরে পাওয়ায় বিশ্বামিত্র মেনকাকে বিদায় দিয়ে অতি বিষণ্নচিত্তে উত্তরদিকে গমন করেন এবং হিমাচলে কৌশিকী নদীর তীরে পুণরায় কঠোর তপশ্চরণে প্রবৃত্ত হন।দীর্ঘকাল পরে ব্রহ্মা বিশ্বামিত্রের নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে মহর্ষিত্ব প্রদান করেন। কিন্তু ব্রহ্মা তাকে বললেন, ‘তোমার সিদ্ধিলাভের বহু বিলম্ব আছে, কারণ তুমি এখনও ইন্দ্রিয় জয় করতে পার নাই’। এ কথা শুনে মহর্ষি পুণরায় উগ্র তপস্যায় প্রবৃত্ত হলেন। এ সময়ে বিশ্বামিত্রের তপোভঙ্গ করার লক্ষ্যে দেবরাজের আদেশে অপ্সরাঃ রম্ভা সমাগতা হলে মহর্ষি তাকে শাপ প্রদানে দীর্ঘকালের নিমিত্ত পাষাণাকারে পরিণত করেন। পরন্তু ক্রোধের কারণে তপঃফল নষ্ট হওয়ায় বিশ্বামিত্র পূর্বদিকে গিয়ে তপস্যা করতে লাগলেন। বহুবর্ষ পরে ব্রহ্মা উপস্থিত হয়ে তাকে ব্রাহ্মণত্ব প্রদান করেন। বিশ্বামিত্র ব্রহ্মর্ষিত্ব সাধে করে দীর্ঘ পরমায়ুঃ, চতুর্বেধ এবং ওঙ্কার লাভ করে মনোরথ-সিদ্ধি হওয়ায় আনন্দ-সাগরে নিমগ্ন হলেন।এতসব প্রাপ্তির পরও বিশ্বামিত্রের মনে সবসময় বশিষ্ঠের অপমানের কথা ঘুরতে লাগলো, তিনি মনে মনে বশিষ্ঠমুনিকে কি ভাবে সাজা দেওয়া যায় তার উপায় খুজতে লাগলেন। এদিকে কল্মাষ্পাদ নামে ইক্ষবাকু বংশে অতি জ্ঞানী ও গুণী এক রাজা ছিলেন আর মহামুনি বশিষ্ঠ ছিলেন তারই পুরোহিত। রাজা একমহা যজ্ঞের আয়োজন করে বশিষ্ঠকে তার হোতা হতে আহবান করেন, কিন্তু বশিষ্ঠ মুনি তখন দেবরাজ ইন্দ্রের যজ্ঞে নিয়োজিত থাকায় রাজাকে কিছুকাল অপেক্ষা করতে বলেন কিন্তু অধীর রাজন তাতে সম্মত হলেন না। যথাকালে যজ্ঞের আয়োজন তিনি করেন কিন্তু মুনি না আসায় রাজার মনে ভীষন ক্রোধের সঞ্চার হয় এবং তিনি বিশ্বামিত্র কে আমন্ত্রন করে নিয়ে আসেন। পথে বশিষ্ঠের পুত্র শক্তির সাথে দেখা হয়। ক্রোধান্বিত রাজা মুনি পুত্রকে বলেন যে এটা রাজপথ আর যজ্ঞের কারনে তাকে সত্ত্বর রাজধানীতে পৌঁছানোর প্রয়োজন তাই পথ ছেড়ে দিতে। এদিকে মুনিপুত্র রাজাকে বলেন যে বেদের বিধান অনুযায়ী এ দ্বিজ পথ তাই রাজা আগে মুনিকে পথ ছাড়া উচিত।এই দুজনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়।একসময় রাজা মুনিপুত্রের গায়ে আঘাত করে ফেলেন, এতে শক্তির শরীর দিয়ে প্রচন্ড রক্তপাত হতে থাকে, মুনিপুত্র এতে ক্রুদ্ধ হয়ে রাজাকে নিশাচর হয়ে মানুষের মাংস ভক্ষক হয়ে তা দিয়ে উদর পুর্তির অভিশাপ দেন।

শাপিত রাজা তখন এক ভয়ানক রাক্ষসে পরিনত হন, এইসব দেখে ভীত বিশ্বামিত্র সেই স্থান থেকে অন্তর্হিত হয়ে যান। রাক্ষসে পরিনত রাজা তখন হাতের সম্মুখে মুনিপুত্র শক্তিকে বধ করে ভক্ষণ করে ফেলেন। এই ভাবে কিছুকাল রাক্ষস হয়ে বনে বনে ভ্রমন করতে থাকেন।একবার বিশ্বামিত্র সেই রাক্ষস কে নিয়ে সেই বনের ভিতরে যান যেখানে বশিষ্ঠের শতপুত্র বাস করতো, আর সেই রাক্ষস তখন একে একে সকল মুনিপুত্র কে হত্যা করে ভক্ষন করে নেয়। এদিকে বশিষ্ঠ ফিরে এসে শূন্যগৃহ দেখে হতবিহ্বল হয়ে পরেন অবশেষে ধ্যান বলে জানতে পারেন যে এ সব বিশ্বামিত্রের ছলনার ফল। গভীর পুত্রশোকে তিনি আত্মত্যাগের সঙ্কল্প নেন ও তিনি তার জন্যে সমুদ্রের ভিতরে প্রবেশ করেন কিন্তু সমুদ্রদেব মুনিবরকে সমুদ্রের কূলে রেখে দেন। সমুদ্রের জলে মৃত্যু না হওয়ায় তিনি এক উচ্চ পর্ব্বতের উপর থেকে ঝাঁপ দেন কিন্তু সেই মুহুর্ত্তে নীচের ধরনী তুলারাশি তে পরিনত হুয়ে যায় ফলে তাঁর তাতেও মৃত্যু হয় নি।তারপরে আগুনের মধ্যে প্রবেশ করেন কিন্তু মুনির স্পর্শে আগুনের তাপ শীতল হয়ে পরে।অবশেষে তিনি শ্বাপদসঙ্কুল গহন বনে প্রবেশ করেন হিংশ্র জন্তুদের ভক্ষ্য হতে কিন্তু মুনিকে দেখা মাত্র সকল বন্য জন্তুরা পালিয়ে যায়। ঘুরতে ঘুরতে মুনি এক গভীর নদীর তীরে আসেন যেখানে লক্ষ লক্ষ ভয়ঙ্কর কুমীর ছিল, মুনি সেখানে ঝাঁপ দিতে গেলে তাঁর কানে বেদমন্ত্রের ধ্বনি আসে, সেই মন্ত্রের ধ্বনি অনুসন্ধান করে তিনি তাঁর পুত্রবধু অদৃশ্যন্তীকে দেখতে পান। তাঁর পুত্রবধূ একমনে বেদমন্ত্র উচ্চারন করে চলছেন।... মুনি বশিষ্ঠ শুধুমাত্র পুত্রবধুকে দেখে অবাক হয়ে গেলেন কারন তাঁর কানে পুত্রবধূর কণ্ঠস্বর ছাড়া আরেকজনের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিলেন যা কিছুটা তাঁর পুত্র শক্তির মতো ছিল, তিনি তাঁর পুত্রবধুকে তাঁর এই কৌতূহল মিটানোর ব্যবস্থা করতে বলেন। মুনির এই প্রশ্নের উত্তরে অদৃশ্যন্তী বলেন যে শক্তির পুত্র তাঁর গর্ভে এবং সেই কণ্ঠস্বর সেই গর্ভস্থ সন্তানেরই। এই শুনে বশিষ্ঠ মুনি যারপরনাই খুশি হলেন, খুশি হলেন এই ভেবে যে তাঁর পুত্র না থাকলেও তাঁর বংশধর আছে। তিনি পুত্রবধূকে নিয়ে আশ্রমে প্রত্যাবর্তনের সময় সেই রাক্ষস রাজার সাথে দেখা হয়, বশিষ্ঠ মুনিকে দেখে রাক্ষসরূপী রাজা কল্মাষ্পাদ মুনিকে গিলতে ধেয়ে আসে।তা দেখে অদৃশ্যন্তী ভয়ে থর থর করে কাঁপতে থাকেন, মুনিবর তাঁকে অভয় দিয়ে বলেন যে এ রাক্ষস নয় এ অভিশপ্ত এক রাজা। মুনি এই বলে হাতের কমণ্ডলু থেকে সেই রাক্ষসের উপর জল ছিটিয়ে দিলেন এবং এতে রাক্ষসের শরীর থেকে রাজা বেরিয়ে আসলেন...। মুনিকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে রাজা মুনিকে প্রণাম করে তাঁর আশির্বাদ প্রার্থনা করেন। বশিষ্ঠ তাঁকে আশির্বাদ করে রাজধানীতে ফিরে রাজপাট পুনঃ গ্রহনের আদেশ করেন। অতপর মুনি তাঁর পুত্রবধূকে নিয়ে আশ্রমে ফিরে আসেন। যথাসময়ে অদৃশ্যন্তী এক পুত্রের জন্ম দেন জ্যোতিষ বিচার করে তাঁর নাম রাখা হয় পরাশর। অতিযত্নে মুনি তাঁর পৌত্রকে লালন পালন করতে থাকেন, নানা বিদ্যায় পরাশর অতি অল্প বয়ষে পারদর্শী হয়ে উঠেন। এদিকে পরাশর বশিষ্ঠকে আপন পিতা হিসেবে ভ্রম করলে অদৃশ্যন্তী ছেলেকে তাঁর আসল পরিচয় বলেন। পিতার ভয়াবহ মৃত্যুর কথা জানতে পেরে ক্রোধে পরাশর কাঁপতে থাকেন এবং পিতার হত্যাকারীর বিনাশের সঙ্কল্প নেন, এই সব দেখে মুনি পৌত্রকে প্রবোধ দিয়ে বলেন যে ব্রাহ্মণের ধর্ম্ম এই নয়, ক্ষমা শান্তি হল ব্রাহ্মণের ধর্ম এবং এই হল বেদের বিহিত।। তিনি এও বলেন যে এই সংসারে যে যার কর্মফল ভোগ করে এবং সেই অনুযায়ী তাঁর পিতারও এই পরিনতি হয়। তাই তিনি পরাশরকে এইসব প্রতিহিংসা পরিত্যাগ করে আবার শাস্ত্র অধ্যয়নের পরামর্শ দেন। পরাশর ও সেই অনুযায়ী বিভিন্ন শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য লাভ করে জগতে নিজের প্রতিষ্ঠা স্থাপন করেন

কৌশিকী অমাবস্যা

  ছবি  কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...