Saturday 11 March 2023

হনুমান ও শনিদেবের সম্পর্ক

 হনুমান ও শনিদেবের সম্পর্ক নিয়ে বেশ কিছু কাহিনী প্রচলিত।



সূর্য সংহিতা অনুসারে হনুমান শনিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি শিবের রুদ্র রূপ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রে হনুমানের ত্বকের রঙ প্রায়শই ভগবান শনিদেবের সঙ্গে তুলনা করা হয়৷ কিংবদন্তি অনুসারে, ভগবান হনুমান শনিদেবকে রাবনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন কথিত আছে যে লঙ্কার রাজা রাবণ, ছেলে মেঘনাদের মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে সব গ্রহদের বন্দী করেছিলেন। তার মধ্যে শনিদেবও ছিলেন। শিবভক্ত রাবণ শিবের শক্তিতে বলীয়ান ছিলেন। সেই বিশেষ শক্তিবলেই তিনি বন্দী করেছিলেন গ্রহদের। রাবণের মৃত্যুবাণ খুঁজতে খুঁজতে হনুমান আবার পৌঁছে যান তাঁর কারাগারে।সেখানে তিনি সব গ্রহকে বন্দী অবস্থায় দেখতে পান এবং হনুমান তাঁদের মুক্ত করেন। তখন সব গ্রহরাই হনুমানকে আশীর্বাদ করেন। সেই আশীর্বাদে তাঁরা জানান, হনুমান এবং তাঁর ভক্তদের ওপর কখনও গ্রহদের কুপ্রভাব পড়বে না। পড়লেও ধীরে ধীরে কেটে যাবে।এবং বন্দী দশা থেকে মুক্তির বিনিময়ে, শনি তাঁর কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, যে কেউ শনিবারে হনুমানের পূজা করবে তাকে সব কিছুতেই অব্যাহতি দেওয়া হবে।
অপর এক কাহিনীতে পাওয়া যায়......
বর্তমানে কলিকাল চলছে আর এই কলি কালে শনির প্রভাব সবচেয়ে বেশি বলে কথিত।  আমরা সকলেই জানি যে  হনুমান অমর, তিনি রামভক্ত।  কলিকালেও  একবার হনুমান একমনে  রাম নাম জপ করছিলেন তখন  সেই স্থান দিয়ে শনিদেব যাচ্ছিলেন। কিন্তু, হনুমানের রাম নাম জপের প্রভাবে সেই স্থানে এক বলয় তৈরি  হয় যা শনিদেব অতিক্রম করতে পারছিলেন না। এতে শনি্দেব  যাবতীয় অতীত ভুলে প্রথমে হনুমানকে কটূক্তি করতে শুরু করেন। এরপর হনুমানের  ধ্যান ভাঙাতে হনুমানের হাত ধরে টানাটানি শুরু করেন। এতে হনুমানের শরীরে ছ্যাঁকা অনুভব হয় এবং তাঁর ধ্যান ভেঙে যায়। তিনি শনিদেবকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন।শনিদেব তখন  হনুমানকেকে পর্যুদস্ত করতে কুদৃষ্টির প্রয়োগ করেন। কিন্তু, তাতে  হনুমানের কিছুই হয় না। এরপর শনিদেব দিব্যাস্ত্র দিয়ে ভনুমানকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। এতে হনুমান পালটা  ল্যাজে বেঁধে শনিদেবকে গাছ এবং পাথরের ওপর বারবার আছাড় মারেন।শনিদেব  তখন জানান, যে কলিযুগে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠএবং তাই সেখানে  হনুমানের  কোনও জোর খাটবে না। উলটে তিনি হনুমানের ওপর ভর করবেন। এই বলে শনিদেব  হনুমানের উপর  ভর করেনকিন্তু এতে বহনুমানের  মাথায় চুলকোনির মত অনুভূত হয় মাত্র তখন তিনি একটা  বিরাট আকারের পাথর তুলে  নিজের মাথা ঘষতে শুরু করেন, যাতে শনিদেবের শরীরে আঘাত লাগে। পাথরের ঘষায় শনিদেব  বজরংবলীর মাথা থেকে নেমে যানএবং তাঁর ওপর আর আঘাত না-করার জন্য ঙ্ঘনুমানের  কাছে অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে শনিদেব জানিয়ে দেন যে  ভনুমান ও তাঁর ভক্তদের ওপর কখনও শনিদেবের প্রভাব খাটবে না। খাটলেও ধীরে ধীরে তা কমে যাবে আর একইসঙ্গে শনিদেব জানিয়ে দেন, তিনি ভনুমানের  সঙ্গেই থাকবেন।  সেই কারণে, ভারতর্বষে বহু মন্দির রয়েছে, যেখানে ভনুমানের সাথে শনিদেবেরও পুজো হয়।
আরেকটি কাহিনী অনুসারে...

হনুমান  হলেন  গিয়ে সূর্যেদেবের শিষ্য। আর, শনিদেব হলেন সূর্যদেব এবং সূর্যদেবের পত্নী দেবী ছায়ার ছেলে। নানা কারণে শনিদেবের সাথে সূর্যদেবের সম্পর্ক খারাপ হয়।  শনিদেব কুদর্শন হওয়ায় সূর্যদেব নিজের ছেলেকে দেখতে পারতেন না। পরে অবশ্য নিজের  ভুল বুঝতে পেরে শনিদেবকে  বারবার ডেকে পাঠান সূর্যদেব। কিন্তু, শনিদেব অভিমান বশতঃ আসতে রাজি হননি।শেষে শিষ্য বহনুমানকে দায়িত্ব দেন সূর্যদেব শনিদেবকে নিয়ে আসার জন্যে। শনিসেবের  প্রখর তেজের বলয় উপেক্ষা করে হনুমান শনিলোকে প্রবেশ করেন এবং  তিনি শনিদেবকে তাঁর সঙ্গে সূর্যালোকে যাওয়ার জন্যে আহ্বান জানান। এতে  শনিদেব সেই প্রস্তাব   হেসেই উড়িয়ে দেন । উপরন্তু এক বানর বিনা অনুমতিতে তাঁর লোকে প্রবেশ করেছে, এবং তাঁকে নিজের সাথে যেতে বলছে, এসব দেখে-শনিদেব কুপিত হন। কথিত আছে, এরপর শনি্দেব সরাসরি আক্রমণ করেন হনুমানকে। কিন্তু, সুবিধা করে উঠতে পারেননি। উলটে, ভনুমানই তাঁকে বেশ কয়েকবার আছাড় মেরে তুলে নিয়ে যান সূর্যালোকে।


Monday 6 March 2023

হোলিকা দহন

 

হোলি উৎসবের নেপথ্যে রয়েছে শ্রীমদ্ভাগবতের এক কাহিনী

হিরণ্যকশিপুর বোন ছিলেন হোলিকা, কঠোর তপস্যার ফলে ব্রহ্মার থেকে এক বর লাভ করেছিল যে আগুন এ তার শরীর পুড়বে না, যদি না তিনি এই ক্ষমতার অপব্যাবহার করেন। এদিকে হিরণ্যকশিপু তার পুত্রের হরি ভক্তি তে রুষ্ট হয়ে তাকে অনেক বার মারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেন । তখন হোলিকা প্রহ্লাদ কে হত্যা করার জন্য হিরণ্যকশিপুর সাথে মিলে এক ষড়যন্ত্র করেন । ঠিক হয় হোলিকা প্রহ্লাদ কে কোলে নিয়ে জলন্ত চিতায় বসবেন । এতে প্রহ্লাদ পুড়ে মরবে । আর ব্রহ্মার বর থাকার জন্য হোলিকার কোন ক্ষতি হবে না । সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী হোলিকা প্রহ্লাদ কে কোলে নিয়ে চিতায় বসলেন । চিতায় আগুন লাগানো হল । প্রহ্লাদ তার পিসির কোলে বসে ভগবান বিষ্ণুর নাম জপতে থাকলেন ।দেখতে দেখতে পাহাড় সম আগুনের শিখা উঠলো । কিন্তু ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় ভক্ত প্রহ্লাদ এর তো কিছুই হল না, কিন্তু ব্রহ্মার সতর্কতা ভুলে ব্রহ্মা প্রদত্ত বরদানের অসৎ ব্যাবহার করার ফলে সেই বর নিষ্ফল হলো আর হোলিকা পুড়ে ছাই হলো । সেদিন ছিল ফাল্গুনী পূর্ণিমা, তাই এই দিন টি বসন্ত উৎসব নামে পালিত হয়ে আসছে । এই দিন টি হল অধর্মের ওপর ধর্মের বিজয় এর দিন ।পাপের ওপর পুন্যের বিজয়ের দিন ,আসুরিক শক্তির ওপর দৈবিক শক্তির বিজয়ের দিন ।হোলিকা ছিল দূরাচারী রাক্ষসী তাই তার মৃত্যুতে যে উত্‍সব পালন করা হয় তাকে হোলি উত্‍সব বলে। হোলির পূর্ব রাতে যেই আগুনের ঝোপ বানানো হয় তা আসলে হোলিকারই চিতা।

কৌশিকী অমাবস্যা

  ছবি  কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...