Thursday 30 November 2017

দূর্বার মাহাত্ম্য

দূর্বার মাহাত্ম্য
দূর্বা আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী দের পূজা বা যে কোন শুভ কাজের এক অপরিহার্য অঙ্গ। কিন্তু কেন দূর্বা ব্যাবহার করা হয় তা অনেকেই জানি না। আজ আমরা তাই নিয়ে একটু আলোচনা করবো।
দুর্বার উল্লেখ আমরা ঋগ বেদ ও অথর্ব বেদে পাই। ভবিষ্য পুরাণে বর্ণিত আছে যে দুর্বার জন্ম হয় ভগবান বিষ্ণুর হাত ও উরুর লোম থেকে যখন তিনি সমুদ্র মন্থনে মন্দ্র পর্বতকে সাহায্য করছিলেন। আবার বামন পুরাণে উল্লেখ যে দুর্বার জন্ম হয় নাগ বাসুকীর পুচ্ছ থেকে যে সময় দেব-আসুরেরা মিলিত ভাবে সমুদ্র মন্থন করছিলেন। আবার আরেক পুরাণের কাহিনী অনুসারে দুর্বাসুর নামে এক কৃষ্ণ ভক্ত অসুর ছিলেন। দুর্বাসুরের মা কৃষ্ণ বিদ্বেষী ছিলেন। দুর্বাসুরের বাবা, ভাই দেবতার হাতে মারা যান। তাই মা দেবতার স্বর্গ রাজ‍্য ধ্বংস ও দেবতার মৃত্যু চাইতেন। মা দুর্বাসুরকে ত্রিদেবের তপস‍্যা করে (ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শিব) অমর হয়ে ত্রিলোক জয় করতে আদেশ দিলেন। মা ত্রিলোকের রাজমাতা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করল।

মায়ের কথায় দুর্বাসুর নির্জনে কঠোর তপস‍্যা শুরু করে। হাজার বছর তপস‍্যার ফলে তার শরীরের মাংস পচে খসে পড়ে। উইপোকা ও পোকামাকড়ে খেয়ে হাড়ও খসে মাটিতে মিশে গেছে। তখনও ত্রিদেবের নামে ধ্যান হচ্ছে। দেবতারা ভয় পেয়ে দুর্বাসুরের তপস‍্যা ভঙ্গে ব‍্যর্থ হয়। অবশেষে ত্রিদেব দুর্বাসুরের কাছে এসে ব্রহ্মা কমন্ডুলের জল ছিটিয়ে পুর্বরূপ দিয়ে বর প্রার্থনা করতে বললেন।
দুর্বাসুর বললেন প্রভু আমি মাতৃ আজ্ঞাতে তপস‍্যা করেছি। মা অমরত্ব বর নিতে বলেছেন। হে গোবিন্দ আমাকে অমরত্ব বর দিলে মা আবারো খারাপ কাজ করাবে। তাই এমন বর দিন যাতে আমি অমরও হতে পারি আবার আপনার সেবায়ও লাগতে পারি। আর আমার দ্বারা যেন জগতের কারো অনিষ্ট না হয়।

ত্রিদেব সন্তুষ্ট হয়ে বললেন শুধু ত্রিদেব নয় জগতের সব দেবতার সেবায় লাগবে তুমি। দুর্বাসুর তুমি দুর্বা ঘাসে পরিণত হয়ে সব দেবতার পূজায় লাগবে। অক্ষয় তৃতীয়ায় অক্ষয় বরে জগতে সবাই মারা গেলেও দুর্বা ঘাস কখনো মরবে না। অমর থাকবে পৃথিবীতে।

পূজাতে দুর্বা পাতা লাগে তিনটি। তিনটি পাতায় ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব অবস্থান করেন। জগতে কোন শুভ কাজ ত্রিদেবকে ছাড়া সম্ভব নয়। তাই শুভ কাজে দুর্বা ছাড়া আশীর্বাদ হবে না। সেই থেকেই দেবদেবীর পূজায় দুর্বার প্রয়োজন হয়।
দূর্বা পবিত্রতার প্রতীক, দূর্বা পুনর্জীবন, দীর্ঘ জীবন, ও উন্নতির ও প্রতীক। তার কারণ হলো দূর্বার একটি ঘাস তুলে নিলেও তার জায়গায় আবার গজিয়ে উঠে নুতুন দূর্বা। দূর্বার সংস্পর্শে যা আসে তাই পবিত্র হয়ে উঠে বলে বিশ্বাস। দূর্বা সকল অশুভ শক্তিকে শোষণ করে শুভ শক্তির বিকিরণ করে তাই সকল পূজায় দূর্বার ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। 
দুর্বাকে পবিত্র মানার আরেকটি কারণ হলো বলা হয় দূর্বার গোঁড়ায় থাকেন স্বয়ং ব্রহ্মা, মধ্যে বিষ্ণু আর অগ্রভাগে মহেশ্বর।
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণা অষ্টমীকে দূর্বা অষ্টমী হিসেবে পালন করা হয়। ঐ দিন দূর্বার অগ্রভাগ পূর্ব মুখী করে ভগবান কে দূর্বা উৎসর্গ করা হয় এই বিশ্বাসে যে এই অনুষ্ঠানের দ্বারা পূর্ব-পুরুষদের কাছ থেকে দীর্ঘায়ুর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। 




আপনারা হয়তো দেখেছেন গনেশ কে দূর্বা দান করতে। কথিত আছে গনেশকে ২১গাছি দূর্বা দিয়ে প্রার্থনা করলে গণেশ ঠাকুর প্রসন্ন হন। রামেশ্বরমের মন্দিরে দেখেছি দুর্বা দিয়ে গণেশ কে আপাদমস্তক আবৃত করে দেওয়া হয়। এর পিছনে যা কাহিনী আছে তা সংক্ষেপে আপনাদের বলছি।
একসময় অনলাসুর নামে এক মহা প্রতাপবান ও অত্যাচারী অসুর ছিল, জানা যায় অনলাসুর যমরাজ ও অপ্সরা তিলত্তোমার ছেলে ছিল। সেই অনলাসুর একবার তপস্যার দ্বারা দেবাদিদেব মহাদেবকে সন্তুষ্ট করে বর লাভ করেছিল। বর হিসেবে তাঁর চোখ থেকে আগুনের গোলা বের করার ক্ষমতা লাভ করে এবং সেই থেকে তাঁর নাম হয় অনলাসুর। অনল মানে আগুন।এই মহাশক্তির বলীয়ান হয়ে অনলাসুর প্রবল অত্যাচারি হয়ে উঠে।নির্দয় ভাবে সে সকলকে হত্যা করতে শুরু করে। সাধু-সন্ন্যাসীদের যাগযজ্ঞ নষ্ট করে নির্বিচারে লুন্ঠন হত্যা করতে থাকে।এমনকি তাঁর হাত থেকে দেবতারাও নিস্তার পেলেন না।অনলাসুরের ভয়ে তাঁরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালিয়ে বেড়াতে থাকেন।অনলাসুর তাঁর চোখ থেকে আগুন গোলা দিয়ে চারিদিক ধংশ করতে থাকে, স্বর্গ মর্ত্ত পাতালে শুরু হয়ে যায় হাহাকার। 
অনলাসুর স্বর্গ থেকে দেবতাদের তাড়িয়ে দেবরাজ ইন্দ্রকে হত্যা করতে উদ্যত হলে ইন্দ্র সেখান থেকে পালিয়ে যান। ইন্দ্রের পলায়নের পর অনলাসুর স্বর্গ রাজ্যে অধিকার করে বসে।
.অনলাসুরের ভয়ে ভীত হয়ে অত্যাচারিত দেবতারা দেবগুরু বৃহস্পতির নির্দেশে ভগবান গনেশের শরনাপন্ন হয়ে গণেশ কে অনলাসুর থেকে স্বর্গ কে উদ্ধার ও দেবগন কে রক্ষা করার প্রার্থনা জানান। দেবতাদের কাতর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে ভগবান গণেশ তাঁদের কে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। গণেশ জানতেন যে অনলাসুর প্রচন্ড পরাক্রমী তাই তিনি অনলাসুর কে বধ করার জন্যে কৌশল অবলম্বন করলেন। গণেশ নিজেকে একটি ছোট্ট শিশুতে পরিনত করে অনলাসুরের সাথে যুদ্ধ শুরু করলেন।অনলাসুরের চোখ থেকে নির্গত আগুনের গোলা গুলিদের তিনি কৌশলে এড়িয়ে যেতে থাকলেন কিন্তু সেই ভয়ানক আগুনের গোলা গুলি চারিদিক ধ্বংস করতে শুরু করলো। অনেকক্ষন যুদ্ধের পর অনলাসুর যখন শিশুরূপী গণেশ কে গ্রাস করতে উদ্যত হল। গণেশ তখন তাঁর বিরাট-রূপ ধারন করে অনলাসুর কে গিলে ফেলেন।
এদিকে অনলাসুর কে গিলে ফেলায় গণেশের শরীরের ভিতর সৃষ্টি হয় প্রচন্ড যন্ত্রণার। সেই যন্ত্রণায় তিনি ছটফট করতে থাকেন, তাঁর এই অবস্থা দেখে স্বর্গের সকল দেবতারা মিলে গণেশের যন্ত্রণা দূর করার চেস্টা করতে থাকেন। দেবী পার্বতী গণেশের সর্বাঙ্গে চন্দনের প্রলেপ দিলেন,কিন্তু সেই আগুনের জ্বালার কোন প্রশমন হল না।দেবাদিদেব মহাদেব তাঁর গলার সাপ দিয়ে গণেশের কোমর বেঁধে দিলেন,কিন্তু তাতেও কোন লাভ হলো না। আগুনের সেই ভীষণ যন্ত্রণায় গণেশ ছটফট করতে থাকেন।ভগবান বিষ্ণু তখন প্রচুর পরিমানে পদ্মের জল ছিটিয়ে দিলেন গণেশের গায়ে,সেই থেকে গণেশের এক নাম হয় পদ্মপাণি। তাতেও কোন লাভ হলো না।চন্দ্রদেব তাই দেখে গণেশের মাথার উপর অবস্থিত হয়ে শীতলতা প্রদান করতে শুরু করলেন সেই জন্য গণেশের আরেক নাম হয় ভালচন্দ্র। সকল প্রচেষ্টা বিফল হতে দেখে মহামুনি কাশ্যপ ২১টি দুর্বা গণেশের মাথায় নিবেদন করেন এবং সেই দুর্বা গুলিই গণেশের যন্ত্রণার অবসান ঘটালো, সেই দুর্বা গুলি দ্বারাই গণেশের শান্তি ফিরে এলো।এতে সন্তুষ্ট হয়ে গণেশ ঘোষণা করলেন যে দুর্বাই হবে উনার সবচাইতে প্রিয় আর যেই ভক্ত শ্রদ্ধা সহকারে ২১ টি দুর্বা গণেশকে নিবেদন করবে তাঁর জীবন ধনধান্যে পরিপূর্ণ হবে ও তাঁর জীবনে নেমে আসবে সুখ। পৃথিবীর সকল প্রকার জ্বালা যন্ত্রণা থেকে তাঁর জীবন হবে মুক্ত।আবার এই ২১ টি দুর্বার মাহাত্ম্য হিসেবে বর্ণিত আছে যে এই ২১টি দুর্বা কিন্তু প্রতীকী। এই ২১ টি দুর্বা হচ্ছে আমাদের মধ্যে পঞ্চ ভুত, পঞ্চ প্রাণ, পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয়, ও মন এই সকলের প্রতীক।


আগের পর্বে আমরা জানতে পারলাম যে দূর্বা দ্বারা গণেশের মানসিক শান্তি লাভ হয়েছিল ও সাথে উনার পেটের জ্বালা ও উপশম হয়েছিল।একি নিছক গল্প না তার পিছনে লুকিয়ে আছে কিছু সত্যতা??এবার দেখব সেই ব্যাপারটা। 
আমাদের আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে দুর্বাকে নানাপ্রকার ঔষধে প্রয়োগ করা হয়, কারণ দুর্বার মধ্যে পাওয়া যায় নানাপ্রকার ঔষধিয় গুণ।
আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে দুর্বা বাত দোষ দূর করতে ব্যাবহার করা হয়। দুর্বার বিশেষ বিশেষ ঔষধিয় গুণ সম্বন্ধে নীচে কিছু আলোচনা করা হলো।

দুর্বার রস মানসিক উত্তেজনা প্রশমিত করে।
চর্মরোগ সারাতেও দুর্বার প্রয়োগ করা হয়, আগের দিনে দুর্বা পিষে তার মধ্যে হলদি বাটা ও সর্ষ তেল দিয়ে গায়ে মাখার প্রচলন ছিল, তার ফলে চর্ম রোগ থেকে শরীর কে রক্ষা করার প্রতিষেধক লাভ হতো। আজও অনেকে তা করে থাকেন তবে তা বিশেষ বিশেষ দিনেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। চর্ম রোগে আক্রান্ত জায়গায় দুর্বাকে এইভাবে প্রলেপ হিসেবে দিলে চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।দুর্বার সঠিক ব্যবহারে কুষ্ট, এগজিমা,স্কেবিজ,চুলকানি সহ বিভিন্ন প্রকার চর্ম রোগ সারায়।
দুর্বার সাথে নিমপাতা মিশিয়ে নিয়মিত ভাবে সেবন করলে ডায়বেটিজ রোগ নিয়ন্ত্রনে থাকে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে সাহায্য করে। 
দুর্বার রস নিয়মিত ভাবে সেবন করলে শারীরিক ক্লান্তি দূর হয় ও অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নিয়মিত ভাবে দুর্বার রস পান করলে স্নায়ু গুলি (nerves) শক্তি লাভ করে। 
দুর্বার রস সকালে খালি পেটে পান করলে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ সহজেই বাইরে বেরিয়ে আসে। রক্তকে বিশুদ্ধ করে আর শরীরের ক্ষার জাতীয় পদার্থের সমতা বজায় রাখে।
দুর্বার মধ্যে এমন গুণ আছে যা শরীরের কোলেস্টরেল কমায় ও মেদহ্রাস করতে সাহায্য করে। হৃদয়ের শক্তিকে আরও সবল করে তুলে।
দুর্বার কয়েক ফোটা চোখে দিলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
দূর্বা রক্তে লোহিতকণা বৃদ্ধি করে হিমোগ্লোবিন মাত্রাকে বৃদ্ধি করে তোলে। 
নিয়মিত দুর্বার রস পান করলে পেটের অম্লতা দূর করে আর পেটের মধ্যের বিষাক্ত পদার্থকে দূর করে।
দুর্বার রসের সাথে দই মিশিয়ে খেলে মুত্রনালীর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। দূর্বা ডিম্বাশয় কে সুদৃঢ় করে।
দূর্বার মধ্যে প্রচুর পরিমানে ফ্লেভনয়েদ থাকে যা আলসার সারাতে সাহায্য করে ও মাড়ির রক্তক্ষরণ কমায়, মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। দূর্বার রস ফুসফুস সংক্রমণও সারিয়ে তোলে।

Friday 3 November 2017

পঞ্চতত্ত্ব

পঞ্চতত্ত্ব নিয়ে  কিছু...
আমাদের এই সম্পূর্ণ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড 'ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম 'এই পাঁচটি বস্তুর উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। সাধারণভাবে অর্থ করা হয়ে থাকে যে, ক্ষিতি অর্থ মাটি, অপ অর্থ জল, তেজ অর্থ আগুন, মরুৎ অর্থ বায়ু এবং ব্যোম অর্থ শূণ্য লোক। ক্ষিতি অর্থ মাটি ঠিক আছে, তবে মাটি এখানে কেবল মাটি নয়, মাটি এখানে সাধারণভাবে সকল কঠিন পদার্থের (solids) সাধারণ প্রতীক, তেমনিভাবে অপ এখানে সকল তরল পদার্থ (liquids), মরুৎ এখানে সকল বায়বীয় পদার্থ (gases), তাহলে দেখা যায় যে, এ তিনটি ভূত সামগ্রীক ভাবে জগতের সকল বস্তু (matters) কে নির্দেশ করছে। অনুরূপভাবে তেজ অর্থ সকল শক্তি (energy)। পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী - বস্তু ও শক্তি পরষ্পর রূপান্তরযোগ্য। ব্যোম হল শূণ্য স্থান (space) আর আমাদের এই শরীরও ঐ পাঁচটি উপাদান দিয়েই তৈরী.এই পঞ্চভূত বা পঞ্চতত্ত্ব সহ পঁচিশ প্রকার গুণ আমাদের শরীরে বিদ্যমান তা কি কি আমরা একটু দেখে নেই। 

ব্রহ্মজ্ঞানে অস্থি, মাংস, নখ, ত্বক ও লোম এই পাঁচটি পৃথিবীর গুন বলে বর্নিত হয়েছে। শুক্র, শোণিত, মজ্জা, মল, মুত্র এই পাঁচটি জলের গুণ বলে বর্নিত হয়েছে। নিদ্রা, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি ও আলস্য এই পাঁচটি অগ্নির গুণ বলে বর্নিত হয়েছে। ধারণ, চালন, ক্ষেপণ, প্রসারণ ও সঙ্কোচণ এই পাঁচটি বায়ুর গুণ বলে বর্নিত হয়েছে। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ও লজ্জা এই পাঁচটি আকাশের গুণ বলে বর্ণিত হয়েছে। আকাশ হতে বায়ু, বায়ু হতে সূর্য(তেজ), সূর্য হতে জল এবং জল হতে পৃথিবীর উৎপত্তি হয়ে থাকে। এই পৃথিবী জলে বিলীন হয়, জল সূর্যে বিলীন হয়, সূর্য বায়ুতে এবং বায়ু আকাশে লীন হয়ে থাকে। এই পাঁচ প্রকার তত্ত্ব হতেই সৃষ্টি হয় এবং এই পঞ্চতত্ত্বেই সকল তত্ত্ব লয়প্রাপ্ত হয়ে থাকে। এই পঞ্চবিধ তত্ত্বের পরে যে তত্ত্ব তাকেই বলে তত্ত্বাতীত বা নিরঞ্জন। স্পর্শন, রসন, ঘ্রাণ, দর্শন এবং শ্রবণ এই পাঁচটি কর্মই ইন্দ্রিয়ের পঞ্চতত্ত্ব আর এই সকল ইন্দ্রিয়ের কর্ম পরিচালিত করে মন(প্রধান)। এই ব্রহ্মাণ্ডের সকল প্রকার লক্ষণ আমাদের এই দেহের মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়। 'সাকারাশ্চ বিনশ্যন্তি নিরাকারো ন নশ্যতে' অর্থাৎ যেগুলি সাকার সেই গুলির বিনাশ হয় এবং যেগুলি নিরাকার (আকার শুন্য) সেগুলি হয় অবিনাশী।

কৌশিকী অমাবস্যা

  ছবি  কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...