আপনাদের যাদের ঘরে গোপালের মুর্ত্তি আছে তাঁরা হয়তো লক্ষ্য করেছেন গোপালের ডান বুকে একটি পায়ের ছাপ আছে। জানেন কি এই পায়ের ছাপটি কার? হয়তো বা আপনারা অনেকেই জানেন। যারা জানেন না তাঁদের জন্যে তুলে ধরছি এর কারন।
এক কাহিনী অনুসারে
একবার সকল দেবতারা ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের মধ্যেকে শ্রেষ্ঠ কে, তা জানার জন্য মহর্ষি ভৃগুর শরণাপন্ন হন। মহর্ষি ভৃগু তখন এই তিন দেবতাদের পরীক্ষার জন্য সর্ব প্রথম ব্রহ্মার কাছে যান এবংতিনি ইচ্ছা করে ব্রহ্মার প্রতি সম্মান না দেখালে, ব্রহ্মা তাঁর প্রতি তীব্র ক্রোধ প্রকাশ করেন। পরে স্তব দ্বারা তাঁকে সন্তুষ্ট করে মহাদেবের কাছে যান। মহাদেবকে সম্মান না দেখানোর কারণে, মহাদেব তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হন, এবারও ভৃগু স্তব করে মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন। এরপর ইনি বিষ্ণুকে পরীক্ষা করার বিষ্ণুর আবাসস্থল গোলকধামে যান। সেখানে বিষ্ণুকে নিদ্রিত অবস্থায় দেখে ইনি বিষ্ণুর বক্ষে পদাঘাত করেন।বিষ্ণু ঘুম থেকে জেগে উঠে ভৃগুর পায়ে আঘাত লেগেছে মনে করে পদসেবা করতে থাকেন। বিষ্ণু মহর্ষি ভৃগুর পা ধরলেন এবং এমনভাবে হাত বুলাতে লাগলেন, যাতে ঋষির আরাম বোধ হয়। বেদে আছে, ঋষি ভৃগুর পায়ের পাতায় একটি অতিরিক্ত চোখ ছিল। এই কাজ করার সময় বিষ্ণু ঋষির অতিরিক্ত চোখটিতে চাপ দিলেন। কথিত আছে, ঋষির এই অতিরিক্ত চোখটি ছিল তার অহংকারের প্রতীক। ঋষি তখন তাঁর ভুল বুঝতে পেরে বিষ্ণুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। সেই থেকে তাঁর বোধ হল ত্রিমূর্তির মধ্যে বিষ্ণুই শ্রেষ্ঠতম।এরপর ভৃগু বিষ্ণুকেই শ্রেষ্ঠ দেবতা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। উল্লেখ্য এরপর থেকে বিষ্ণুর বুকে ভৃগুর পদচিহ্নের ছাপ পড়ে যায়।
ভগবান শ্রী বিষ্ণু বা গোপালের বিগ্রহ যখনই তৈরি করা হয় তখনি ভগবানের ডান বক্ষের দিকে ভৃগু মুনির চরণ অঙ্কন করা হয়। ভৃগু মুনির চরণের ছাপ ছাড়া গোপাল ঠাকুরের বিগ্রহ সম্পূর্ণ হয় না।
(চলবে)