আমাদের কাছে দীপাবলি ও একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে আমাদের উপনিষদের সেই অমোঘ বাণীর সন্ধান পাই যা হল
"অসতো মা সদগময়
তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়।"
যেখানে প্রার্থনা করা হচ্ছে যে আমাদের কে "অসৎ হইতে সত্যের পথে নিয়ে চল, অন্ধকার হইতে জ্যোতিতে নিয়ে চল, মৃত্যু হইতে অমৃতে পথে নিয়ে চল।"এইদিনেই শ্রীরামচন্দ্র তাঁর চৌদ্দবছরের বনবাস শেষ করে অযোধ্যাতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং সেই আনন্দে ওই দিনে স্বাগত জানানোর চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী অযোধ্যাবাসীরাও ঘিয়ের প্রদীপ প্রজ্বলিত করে শ্রী রামচন্দ্র কে স্বাগত জানান।
আবার বিষ্ণু পুরাণে পাই আজকের দিনে বিষ্ণুর বামন অবতার বলিকে পাতালে পাঠান অজ্ঞতা ও অন্ধকার বিদূরিত করতে,এবং সেই অনুসারে বলিকে অযুত-অযুত প্রদীপ জ্বালিয়ে ভালবাসা ও জ্ঞানের প্রচার করার অনুমতি প্রদান করেন। এই দিনটিতেই আবার লক্ষ্মী-গণেশের পুজোর নিয়ম "দীপাবলি" কথা টির মানে হল প্রদীপের সমষ্টি। এই দিনে ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা।তবে আজকাল বেশীরভাগ জায়গায় মাটির প্রদীপ দেখা যায় না, তার বদলে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক বাতির প্রচলন ই অধিক।তবে এই প্রদীপ জ্বালানোর কারন ছিল অমঙ্গলকে বিদায় দিয়ে মঙ্গল কে বরণ করার প্রতীক, এই দিনে বাড়িঘর পরিষ্কার সাজিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে মা লক্ষ্মী দেবীর আহ্বান করার রীতি। কারো কারো মতে সেই সময় অমঙ্গল বিতাড়নের জন্য আতসবাজিও পোড়ানো হয়। কেহ মনে করেন ক্ষেতের শস্য বিনাশ কারি কীটপতঙ্গ কে বিনাশের জন্য আতস বাজীর শব্দের সাহায্য নেয়া হয়। কোন কোন অঞ্চলে এই দীপাবলির সময় নতুন কাপড় পরার ও আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে ফল মিষ্টি ও বিলানোর রীতি ও দেখা যায়।
জৈনরা এই দিন কে মহাবীরের মোক্ষ লাভের দিন হসেবে পালিত করেন এবং শিখ সম্প্রদায়ের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ ও ৫২ জন রাজপুত্র এই দিনটিতেই মুক্তি পেয়েছিলেন বলে শিখ সম্প্রদায়রা এই দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করেন আলোকসজ্জা, ও মিষ্টি বিতরনের মাধ্যমে।
এই শুভ দীপাবলির আনন্দ মুহূর্তে সকল কে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা, প্রীতি ও শুভকামনা।
No comments:
Post a Comment