Friday, 16 December 2022
বিশালাক্ষী দেবী
Saturday, 19 November 2022
দশদিক ও দশদিকপাল
আমরা সকলেই জানি যে আমাদের চারপাশে দিক চারটি। পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ, কিন্তু এ ছাড়াও আরও চারটি কোণ আছে , এগুলি হল ঈশান, অগ্নি, বায়ু, নৈঋত কোণ। উত্তর ও পূর্বের মধ্যস্থান ঈশান, দক্ষিণ-পূর্বের মধ্য স্থান অগ্নি উত্তর-পশ্চিমের মধ্যস্থানকে বায়ু কোণ বলে, এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের মধ্যস্থান নৈঋত্ কোণ নামে পরিচিত। পাশাপাশি আকাশ বা উর্দ্ধ ও পাতাল বা অধঃ এই সব দিক মিলিয়ে হয় দশ দিক। বাস্তুশাস্ত্রে প্রতিটি দিকের নিজস্ব নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিটি দিকের পৃথক দিকপাল বা অধিপতি দেবতা ও অধিপতি গ্রহ আছেন। তাই প্রতিটি দিকের পৃথক পৃথক প্রভাব ও আছে। আবার এই দশ দিকের প্রত্যেকের এক এক অধিপতি ও আছেন। বাস্তুশাস্ত্র মতে চার দিক ও চার কোণের উপর মানুষের সর্বসিদ্ধি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণের অনেকটাই নির্ভর করে৷ আজ আমি এই বিষয়ে আলোচনা করছি আপনাদের সাথে…
দক্ষিণ দিক: দক্ষিণ দিক খুব একটা খোলামেলা না হওয়াই ভালো। বাস্তুমতে এই দিকের অধিপতি হলেন হিন্দু দেবতা যম। আর এই দিকের প্রতিনিধি গ্রহ হল মঙ্গল। তাই ঘরের দক্ষিণ দিক বেশি খোলামেলা হলে বাড়ির সদস্যদের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ হতে পারে এমনকি মৃত্যুভয় থাকবে। দক্ষিণ দিকে খোলামেলা বাড়ির সদস্যরা মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমাতেও জড়িয়ে পড়তে পারেন। দক্ষিণ দিকে বন্ধ দেওয়াল থাকলে ভালো তাহলে
অর্থ ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে।
পূর্ব দিক: পূর্ব দিক অত্যন্ত শক্তিশালী দিক বলে গণ্য। এই গ্রহের অধিপতি হলেন দেবরাজ ইন্দ্র। ইন্দ্র বৃষ্টি, প্রতিপত্তি, উৎসব ও শক্তির দেবতা।পূর্ব দিকের প্রতিনিধি গ্রহ হলেন সূর্য, যিনি নিজেই শক্তির বিশাল উৎস । সূর্যের প্রভাবে সকলের জীবনে উন্নতি হয়। তাই পূর্ব দিককে আমরা উন্নতির দিক হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি। বাড়ির পূর্ব দিকও খোলামেলা, আলোকজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। এই দিকে বন্ধ দেওয়াল থাকলে জীবনে উন্নতি বাধাপ্রাপ্ত হবে। বাড়ির পূর্ব দিকে বাথরুম থাকা বাস্তুমতে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত।
পশ্চিম দিক: এই দিক জীবনে প্রতিষ্ঠা ও সমৃদ্ধির দিক। এই দিকের অধিপতি হলেন বৃষ্টি, খ্যাতি ও ভাগ্যের দেবতা বিষ্ণু। এই দিকের প্রতিনিধি গ্রহ হলেন শনি। বাড়ির পশ্চিম দিক খুব একটা খোলামেলা রাখা বাঞ্ছনীয় নয়। পশ্চিম দিকে বাড়ির মূল দরজা না হওয়াই ভালো। এতে অর্থলাভের সম্ভাবনা নষ্ট হয়।
ঈশান (উত্তরপূর্ব) - বাস্তুমতে খুবই ভালো দিক। এই দিকের অধিপতি হলেন হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ দেবতা শিব। এর প্রতিনিধি গ্রহ হলেন বৃহস্পতি যিনি ধনসম্পত্তি, প্রতিপত্তি ও সুস্বাস্থ্য দান করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উত্তরপূর্ব অত্যন্ত শুভ দিক। এই দিক থেকে শক্তিশালী চৌম্বকীয় শক্তি নির্গত হয়। বাড়ির উত্তরপূর্ব দিকে শৌচাগার নির্মাণ করলে তা গোটা পরিবারকে শেষ করে দিতে পারে। এই দিকে দাহ্যশীল (যা
আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে) পদার্থ রাখা উচিত নয়।
অগ্নি (দক্ষিণপূর্ব) - দক্ষিণপূর্ব দিকের অধিপতি হলেন অগ্নিদেব। এর প্রতিনিধি গ্রহ শুক্র। সূর্য যখন দক্ষিণপূর্ব দিকে আসে্ন, তখন তাঁর মেজাজ অত্যন্ত উগ্র থাকেন। সবথেকে উগ্র অবস্থায় এই সময়ই থাকে্ন সূর্য। এই উগ্র রূপকে আগুনের সঙ্গে তুলনা করা হয়। আগুন সংক্রান্ত কাজকর্ম এই দিকে করলে ভালো হয়। এই দিকে জিনিসপত্র রাখা ও নির্মাণ করার সময় সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
এইদিকে রান্নাঘর থাকা ভালো, আর জলের আধার বা জলের ট্যাঙ্ক,পুকুর বা জলাশয় এদিকে থাকা সেই পরিবারের অনর্থের কারণ হতে পারে।
নৈঋত (দক্ষিণপশ্চিম) - এই দিকের অধিপতি হল নৈরিতি নামের এক রাক্ষস। এর প্রতিনিধি গ্রহ রাহু। উত্তরপূর্ব দিক থেকে নির্গত চৌম্বকীয় শক্তি এই দিকে সঞ্চিত হওয়ায় এটাই বাড়ির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। এই দিকের সঠিক ব্যবহার খুবই শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর জীবন দিতে পারে। এই দিক সম্পদ, স্বাস্থ্য ও আত্মবিশ্বাসের দিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাস্তু মেনে ব্যবহৃত হলে দক্ষিণ পশ্চিম দিক খ্যাতি এনে দেবে। কিন্তু ভুল ব্যবহার নানা সমস্যা ডেকে আনতে পারে। অর্থ বেরিয়ে যাবে, হতাশা, উদ্বেগ এমনকি আত্মহত্যাপ্রবণতাও দেখা দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে দক্ষিণ পশ্চিম দিকের ভুল ব্যবহার কর্মীদের কাজে অমনোযোগের কারণ ও হয়।
আকাশ বা ঊর্ধ্বঃ-আকাশকে ঊর্ধ্ব দিক বলা হয়। ব্রহ্মা এ দিকের অধিপতি। বাস্তু শাস্ত্রে এই দিকের অধিক মাহাত্ম্য স্বীকার করা হয়। বেদ মতে, কিছু চাইতে হলে ব্রহ্মার কাছ থেকে চাও। তাঁর কাছ থেকে চাইলে সমস্ত কিছু লাভ করা যায়। তাই মনে করা হয় ঊর্ধ্ব দিকে মুখ করে প্রার্থনা করলে তা পূর্ণ হয়। বাস্তু অনুযায়ী বাড়ির আশপাশে বৃক্ষ, বাড়ি, মন্দিরের ছায়া পড়লে বাড়িতে বসবাসকারী ব্যক্তির ওপর প্রভাব পড়ে।
পাতাল বা অধঃ পাতালের দিককে অধো দেশ বলা হয়। এই দিকের অধিপতি শেষনাগ। শেষনাগকে অনন্ত বলা হয়। তাই যে কোনও নির্মাণের আগে ভূমি পুজো করা হয়। বেসমেন্ট, কুয়ো, গোপন পথ ইত্যাদির প্রতিনিধিত্ব করেন শেষনাগ। এ ছাড়া বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী বাড়ির নীচের বস্তুর প্রভাব বাড়ি ও তাতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের ওপর পড়ে। তাই গৃহ নির্মাণের পূর্বে এ সব ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়া উচিত। জমির ভিতরের মাটি হলুদ হলে এটি ভাগ্য বৃদ্ধি করে।
কৌশিকী অমাবস্যা
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...
-
আমাদের ব্রহ্মান্ডের ১৪টি ভুবন ১ । সত্যলোক ২ । তপোলোক ৩ । জনলোক ৪ । মহর্লোক ৫ । স্বর্গলোক ৬ । ভুবর্লোক ৭ । ভ...
-
মা কালীর ধ্যান মন্ত্র ওঁ করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাম্ । কালিকাং দক্ষিণাং দিব্যাং মুন্ডমালাবিভূষিতাম্ ।। সদ্যশ্ছিন্...
-
পুজার উপাচার অনুযায়ী পূজা অনেক প্রকার হয় যেমন-পঞ্চোপচার, দশোপচার, ষোড়শোপচার,অষ্টাদশ-উপচার— ইত্যাদি। পঞ্চ-উপচার— “গন্ধম্ পুষ্প...