Friday 15 September 2017

মানস পূজা

সকল প্রকার পুজার মধ্যে মানস পূজাকে শ্রেষ্ঠ পূজা বলে গণ্য করা হয়। মানস পুজায়,সাধারণত যে সকল উপাচারে পূজা করা হয়ে থাকে সেই সমস্ত উপচারই নিবেদন করা যায় তবে তা প্রতীকী অর্থে। কিভাবে সেই স্থুল জিনিষ গুলি নিবেদন করা হয় তার বর্ণনা মহানির্বাণতন্ত্রে পাওয়া যায়। সেখানে  মানস পুজো সম্বন্ধে এই শ্লোকটি আছে


পূজয়েৎ পরয় ভক্ত্যা মানসৈ রূপচক্রৈ হি।
হৃৎপদ্মম্ আসনম্ দদাৎ সহস্রাচ্যুতামৃতৈ হি।।
পাদ্যম্ চরণদ্বয়ো ধ্যায়াৎ মানসস্তবার্ঘ্যম্ নিবেদয়েৎ।
তেনামৃতেন আচমনম্ স্নানীয়মপি কল্পয়েৎ।।
আকাশতত্ত্বম্ বসনম্ গন্ধন্তু গন্ধতত্ত্বকম্।
চিত্তম্ প্রকল্পয়েৎ পুষ্পম্ ধূপম্ প্রাণান্ প্রকল্পয়েৎ।।
তেজস্তত্ত্বান্তু দীপার্থে নৈবেদ্য চ সুধাম্বুধিম্।
অনাহতধ্বনিম্ ঘণ্টাম্ বায়ুতত্ত্বঞ্চ চামরম্।।
নৃত্যমিন্দ্রিয়কর্মাণি চাঞ্চল্যম্ মনস্তথা।।


সাধক নিজের হৃদয়কে পদ্ম রূপে কল্পনা করে সেখানে ইষ্টদেবতার আসন পেতে দেবেন। মস্তিষ্কের সহস্রাতে সহস্রদল পদ্মের যে অমৃত, তা তিনি ইষ্টের পা ধুতে পাদ্য হিসাবে দেবেন। সাধকের মনটি হল অর্ঘ্য। সহস্রার ঐ অমৃতই স্নানজল ও মুখ ধোওয়ার জল রূপে নিবেদন করা হয়, সাধক নিজের ভিতরের আকাশ উপাদানকে বস্ত্র ও ভূমি উপাদানকে গন্ধ রূপে কল্পনা করে নিবেদন করবেন। চিত্তকে পুষ্প কল্পনা করতে হয়। পঞ্চপ্রাণ (প্রাণ, অপান, ব্যান, উদান, সমান) ধূপ ও অগ্নি তত্ত্ব দীপ রূপে নিবেদিত হয়। সাধকের অনাহত চক্রের অনাহত ধ্বনিই ঘণ্টার প্রতীক। আমাদের অন্তরের সুধা ইষ্টের খাদ্য বা নৈবেদ্য। বায়ু তত্ত্ব হল চামর। সমস্ত ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়া বা মনের চাঞ্চল্য নৃত্য রূপে ইষ্টদেবতাকে নিবেদন করতে হয়। 

বাহ্যপূজাক্রমেণৈব ধ্যানযোগেন পূজয়েৎ।
সংপূজ্য চিন্তয়েদ্দেবং বচসা মনসা হৃদা।
তথৈব সাধক্যে লোকে চান্তযোগপরায়ণঃ।। ইতি মুণ্ডমালা তন্ত্রে।

হৃদয়ে প্রার্থনামুদ্রা স্থাপনপুর্ব্বক বাহ্যপূজার উপচার উপকরণাদি এবং উল্লিখিত ক্রমদ্বারা মানসপূজা করিতে হয়।বাক্য মন ও হৃদয় দ্বারা মানস পূজা করিবে।



No comments:

Post a Comment

কৌশিকী অমাবস্যা

  ছবি  কৃতজ্ঞতাঃ- গুগল চিত্র পুরাণমতে, কৌশিকী অমাবস্যার শুভতিথিতে পরাক্রমশালী শুভ-নিশুম্ভ অসুর দুই ভাইকে বধ করার সময়েই দেবী পার্বতীর দেহের ...