নবরাত্রির ষষ্ট দিনের আরাধিতা দেবী... দেবী কাত্যায়নী...।সকলকে জানাই আমার শুভেচ্ছা
দেবী কাত্য়ায়ণী
চন্দ্রহাসোজ্জ্বলকরা শার্দূলবরবাহনা |
কাত্য়ায়নী শুভং দদ্য়াদেবী দানবঘাতিনী ||
চন্দ্রহাসোজ্জ্বলকরা শার্দূলবরবাহনা |
কাত্য়ায়নী শুভং দদ্য়াদেবী দানবঘাতিনী ||
কাত্যায়ন নামক এক মহর্ষি ছিলেন ।
তিনি বহু বছর ধরে মহামায়া কে কন্যা রূপে প্রাপ্তির জন্য কঠিন তপস্যা করেন ।
মহামায়া তার মনস্কামনা পূর্ণ করলেন ঋষি কাত্যায়নের তপস্যায় মা তার ঘরে আসেন, তাই তার নাম কাত্যায়িনী।। মহিষাসুর কে বধের জন্য এই দেবীর আবির্ভাব ।
দানব রাজ মহিষাসুরের অত্যাচার চরম সীমা অতিক্রম করলে দেবতা দের ও ব্রহ্মা , বিষ্ণু
, মহেশের তেজে এক দেবীর আবির্ভাব হল। এই দেবী কে প্রথম
কাত্যায়ন ঋষি পূজা করেন । তাই দেবীর আর এক নাম কাত্যায়নী । এই দেবী যুদ্ধে সেনা
মন্ত্রী সমেত মহিষাসুরকে বধ করেন । এই দেবীকে মহিষমর্দিনী নামেও ডাকা হয় ।শাক্তধর্ম মতে, তিনি মহাশক্তির একটি
ভীষণা রূপ এবং ভদ্রকালী বা চণ্ডীর মতো যুদ্ধদেবী রূপে পূজিতা। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, তাঁর গাত্রবর্ণ দুর্গার
মতোই লাল। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে রচিত পতঞ্জলির মহাভাষ্য গ্রন্থে তাঁকে
মহাশক্তির আদিরূপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।কৃষ্ণ যজুর্বেদের অন্তর্গত তৈত্তিরীয়
আরণ্যকে দেবী কাত্যায়নীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। স্কন্দ, বামন ও কালিকা পুরাণ
অনুযায়ী, মহিষাসুর বধের
নিমিত্ত দেবগণের ক্রোধতেজ থেকে তাঁর জন্ম। ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে এই পৌরাণিক ঘটনাটির
প্রেক্ষাপটেই বাৎসরিক দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
মা কাত্যায়নী দশ ভুজা আবার চতুর্ভুজা । এঁনার বাহন সিংহ ।
দশভুজা দেবীর হাতে ত্রিশূল , ধনুক
, বাণ , বজ্র
, শঙ্খ , চক্র
, পাশ , গদা
, খড়্গ , ঢাল
আদি অস্ত্র থাকে । চতুর্ভুজা দেবীর ওপরের দক্ষিণ হস্তে অভয় মুদ্রা ও বাম হস্তে
পদ্ম থাকে , নীচের দক্ষিণ হস্তে বর মুদ্রা ও তরোয়াল থাকে । ইনি স্বর্ণের
মতো উজ্জ্বল ।খ্রিষ্টীয় পঞ্চম-ষষ্ঠ শতাব্দী নাগাদ রচিত
মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম্ ও একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে রচিত
দেবীভাগবত পুরাণ গ্রন্থে কাত্যায়নীর দিব্যলীলা বর্ণিত হয়েছে। খ্রিষ্টীয় দশম
শতাব্দীতে রচিত কালিকা পুরাণে বলা হয়েছে, উড্ডীয়ন(ওড়িশা) দেবী কাত্যায়নী ও জগন্নাথের ক্ষেত্র। কাত্যায়নী পূজা অতি
প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত।
এঁনার পূজা করে গোপিনী গন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে পতি রূপে
পেয়েছিলেন । এঁনাকে ব্রজ গোপী মণ্ডলের দেবী বলা হয় । ইনি ভক্ত দের চতুর্বিধ ফল দেন
। রোগ , শোক , দুর্গতি
, বিপদ থেকে রক্ষা করেন । এঁনার কৃপায় পাপ রাশি ধ্বংস হয় ।
ইনি পরম পদ , অলৌকিক তেজ প্রদান করেন ।যোগশাস্ত্র
ও তন্ত্র মতে, কাত্যায়নী আজ্ঞা চক্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী এবং এই বিন্দুতে
মনোনিবেশ করতে পারলে তাঁর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
ইনি সিংহবাহনা এবং চতুর্ভূজা। ইনি ভগবানের পথে মানুষকে মতি দেন। বৃন্দাবনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রজবালাদের কাত্যায়নী ব্রত করতে বলেছেন। দূর্গাপূজার ষষ্ঠ দিনে কাত্যায়নী পূজা করা হয়।
No comments:
Post a Comment